শরীয়তপুরে ৩ মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর : ১ জন আটক

 

স্টাফ রিপোর্টার: শরীয়তপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে পালং মডেল থানা থেকে ৩০০ গজ দূরে অবস্থিত পালং হরিসভায় জেলার কেন্দ্রীয় মন্দির ও শহরের ঋষিপাড়া কালিমন্দির এবং সদর উপজেলার কোটাপাড়া মন্দিরে ঢুকে শুক্রবার গভীর রাতে একদল দুষ্কৃতকারী প্রায় ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। হরিসভায় জেলা কেন্দ্রীয় মন্দিরের প্রধান ফটকের দরজা ভেঙে দুর্বৃত্তরা মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। পালং হরিসভায় জেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরে মূর্তি ভাঙচুরের সময় পালং বাজারের একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী দেখতে পেয়ে চিত্কার দিলে আশপাশের লোকজন এসে সিরাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরে গণধোলাই দিয়ে সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। সিরাজুল ইসলাম সদর উপজেলার গুচ্ছগ্রামের নুরুল ইসলাম কাজীর পুত্র। তিনি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে ডোম হিসেবে কর্মরত আছেন।

শরীয়তপুর জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জেলা কমিউনিটি  পুলিশিং সমাবেশে উপস্থিত পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক স্থানীয় সাংবাদিকদের এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছি। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইজিপি একেএম শহীদুল হক এবং সিনিয়ির স্বরাষ্ট্র সচিব ড. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক খান গতকাল শনিবার বিকালে শরীয়তপুর স্টেডিয়ামে কমিউনিটি পুলিশিং এর জেলা সমাবেশ অনুষ্ঠানে যোগ দিলেও তারা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেননি। শুক্রবার থেকেই আইজিপি জেলা সদরে উপস্থিত থাকাকালে মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনাকে নাশকতা বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সকাল ১০টায় জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। মিছিল শেষে বেলা ১১টায় হরিসভায় কেন্দ্রীয় মন্দির কক্ষে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। জেলা কেন্দ্রীয় মন্দির কমিটির সভাপতি বিমল কৃষ্ণ অধিকারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শঙ্কর প্রসাদ চৌধুরী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মুকুল চন্দ্র রায় ও গোবিন্দ চন্দ্র প্রমুখ।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আগামীকাল সোমবার জেলা সদরে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শঙ্কর প্রসাদ চৌধুরী। সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল্লাহ আল মামুন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে ও শরীয়তপুর পৌর মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।