রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হত্যা এক সপ্তাহে কিছুই পায়নি পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও হত্যার মোটিভ ও জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। গত এক সপ্তাহে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না থাকায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক রেজাউলের পরিবারের সদস্য, সহকর্মী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ অবস্থায় গতকাল শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মানববন্ধনে যোগ দিয়ে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানালেন রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসের সিনেট ভবনের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ, সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘এ আন্দোলনকে বেগবান করতে আপনারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একটা মঞ্চ তৈরি করবেন। সেই মঞ্চে শিক্ষকেরা নেতৃত্ব দেবেন। সেই মঞ্চের কর্মসূচিকে আমরা সর্বাত্মকভাবে সমর্থন করে যাব।’
পুলিশ প্রশাসনের সমালোচনা করে সাংসদ বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তিরা বলেন, নিজের নিরাপত্তাবলয় নিজেরা তৈরি করুন। আপনারা চলবেন বন্দুক হাতে, আর আমাদের বলবেন নিরাপত্তাবলয় নিজেরা তৈরি করতে! এটা প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারীর বক্তব্য হতে পারে না। আপনি পুলিশপ্রধান হতে পারেন। কিন্তু আপনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, এটা ভুলে যাবেন না।’ মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আজমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সমিতির সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ্, লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি আওয়াল হোসেন মোল্যা, আইন বিভাগের সভাপতি আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, আইন অনুষদের প্রাক্তন ডিন বিশ্বজিৎ চন্দ, বাংলা বিভাগের সভাপতি অমৃত লাল বালা প্রমুখ।

তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রেজাউস সাদিক বলেন, মামলার তদন্ত চলছে, তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা যাবে না। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বলেন, এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, অপর দুজনের রিমান্ড শুনানি সোমবার হবে। এ ছাড়া আরও দুজনকে এনে গোয়েন্দা কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গত ২৩ এপ্রিল সকালে নগরের শালবাগান এলাকায় নিজ বাসার কাছে রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার দিন বিকেলে নিহত শিক্ষকের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ বাদী হয়ে নগরের বোয়ালিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা করেন। এ ঘটনায় আটক শিবিরের নেতা হাফিজুর রহমান, বাগমারার ইমাম রায়হান ইসলাম ও যুবক খায়রুল ইসলামকে অধ্যাপক রেজাউল হত্যায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাফিজুরকে চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই ঘটনায় শুক্রবার ভোরে বাগমারা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল হাকিম (৬৩) ও তাঁর ছেলে আরিফুল ইসলামকে আটক করা হয়।