সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি : সিলেটে ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড

সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আজ থেকে মর্নিং শিফট চালু

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় অসহনীয় তাপমাত্রায় মানুষ ও প্রাণিকূল হাঁপিয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহের অন্তত ১১ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল শুক্রবারও আবহাওয়া অফিস দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই অসহনীয় তাপমাত্রার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়গুলো মর্নিং শিফট চালু করলে শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বস্তি ফেরে। অথচ গতপরশু থেকে শোনা যায়, মর্নিং শিফট বাতিল করে ফের ডে শিফটে বিদ্যালয় চালু রাখার নির্দেশনা দেয়ার কথা ভাবছেন কর্তারা। গত ১৯ এপ্রিল থেকে চুয়াডাঙ্গার ৪৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল সাতটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ক্লাস চালু করা হয়। আগামী ৬ জুন পর্যন্ত মর্নিং শিফট চলবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ পোদ্দার জানালেও তা বাতিল নিয়ে নানা তথ্য পাওয়া গেলেও গতকাল সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এদিকে আজ শনিবার থেকে চুয়াডাঙ্গার ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মর্নিং শিফট চালু হচ্ছে। এখানে ক্লাস হবে সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে নয়টা এবং ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজাহার আলী জানান, শিশুদের অসহনীয় কষ্টের কথা বিবেচনা করে মর্নিং শিফট চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে কতোদিন চলবে তা ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চিফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী ইমরুল কাদির জানান, এই এলাকায় যে সমস্ত নদনদী রয়েছে সেগুলো খনন করে পানি প্রবাহ বাড়াতে হবে এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশি বেশি করে গাছ লাগাতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ হামীম হাসান বলেন, ২১ বছর চাকরি জীবনে গরম নিয়ে কিছু করার বিষয়ে কখনওই কেউ কিছু জানায়নি। তবে সময় এসেছে কিছু করার।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম জানান, দক্ষিণ ও পশ্চিম থেকে ধেয়ে আসা গরম বাতাসের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা চলে যাওয়ায় শীতের সময় শীত এবং গরমের সময় গরম বেশি অনুভূত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস জানান, গরমের বিষয়ে করণীয় কি উদ্যোগ নেয়া যায় তা ভেবে দেখা হচ্ছে।

আবহওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ মরসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল অঞ্চলসমূহে অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় তা বিস্তার লাভ করতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ও সর্বনিম্ন সিলেটে ২০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। গতকাল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ১৪৭ মিলিমিটার। এদিকে চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টি না হওয়ায় প্রাণিকূল ওষ্ঠাগত। জনজীন স্থবির হয়ে পড়েছে। একের পর এক নারী-পুরুষ হিটস্টোকে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।