শফিক রেহমানকে সাথে নিয়ে বাসায় পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টর: সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সাথে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ তার ইস্কাটনের বাসা থেকে বেশ কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে। জব্দ করা হয়েছে তার দুটি পাসপোর্ট, যার একটি যুক্তরাজ্যের। পুলিশের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র মামলা-সম্পর্কিত ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) কিছু নথি জব্দ করা হয়েছে ওই বাসা থেকে। মামলার তদন্ত-তদারক কর্মকর্তা ও ডিবির উপকমিশনার মাশরুকুর রহমান বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় শফিক রেহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীপুত্র অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র মামলা-সংক্রান্ত এফবিআইয়ের নথি তার বাসায় সংরক্ষিত আছে। কিন্তু তিনি ছাড়া এটা কেউ পাবেন না। এ জন্য তাকে সাথে নিয়েই তার বাসায় যাওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় গেলে শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমান বলেন, ‘ডিবির ১০-১২ জন সদস্য শফিককে নিয়ে তিনতলায় তার পড়ার ঘরে যান। এরপর তারা বাসার সব কক্ষ ঘুরে দেখেন। এ সময় শফিকের কিছু কাগজপত্র ও দুটি পাসপোর্ট নিয়ে গেছেন তারা।’

তালেয়া রেহমান বলেন, ‘শফিকের সাথে আমার কিছু কথা হয়েছে। ওকে জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছো? বললো, পুলিশ তার সাথে ভালো ব্যবহার করেছে, সেদিক দিয়ে চিন্তা নেই। তবে তার চিন্তা হচ্ছে তাকে জামিন দেয়া হবে না, জেলেই দেবে। শফিক বলছে যে, সে কোনো দিন কারও কাছে কোনো কিছু চায়নি। কেবল দিয়েছে। দিয়েছে ভালোবাসা। তার বদলে কোনো পদ বা কোনো কিছু পায়নি। আশাও করেনি।’
গত শনিবার ইস্কাটনের বাসা থেকে শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়। সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে পুলিশ গত বছরের আগস্টে পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়। বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন এই মামলাটি মিথ্যা আখ্যা দিয়ে তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইএফজে, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন সংগঠন গতকাল শফিক রেহমানের মুক্তি দাবি করেছে।

মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর ১২টার দিকে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ডিবির কর্মকর্তারা একটি মাইক্রোবাসযোগে শফিক রেহমানকে নিয়ে তার ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় যান। মাইক্রোবাসের সাথে ডিবির সদস্যদের বহনকারী দুটি পিকআপ ছিলো। কাগজপত্র জব্দ করার ক্ষেত্রে ডিবিকে সহায়তা করেন শফিক রেহমান।
তালেয়া রেহমান বলেন, ‘জেলে থাকা নিয়ে শফিক যথেষ্ট চিন্তিত। তাকে বিষণ্ন মনে হয়েছে। তার গালের দু-এক জায়গায় ফোলা ছিলো। শফিক বলেছে, এগুলো মশার কামড়। মশার ওষুধ দেয়া হলেও কাজ হয়নি। ডিবি কর্মকর্তারা তাকে চিন্তা না করতে বলেছেন। জানিয়েছেন, ভিআইপি কক্ষটি তাকে দেয়া হয়েছে।’

পুলিশের ব্রিফিং: সজীব ওয়াজেদ জয় অপহরণ ও হত্যা ষড়যন্ত্র মামলা নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম গতকাল মিন্টো রোডের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাধে কথা বলেন। তিনি জানান, প্রথমে প্রধানমন্ত্রীপুত্র অপহরণ ও হত্যা ষড়যন্ত্র-সংক্রান্ত ঘটনায় রমনা থানায় জিডি করা হয়। ওই জিডির তদন্ত করতে গিয়ে জাসাস (জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা) সহসভাপতি মোহাম্মদউল্লাহ মামুনের ছেলে ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রিজভী আহমেদ সিজারের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসে।