একের পর এক মৃত্যু : নূন্যতম তদন্তও হয় না

 

চিকিৎসক কতোজনকেই তো সুস্থ করেন, দু একজন মারা গেলে এতো হই চই কেনো? প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক হলেও প্রশ্ন কর্তার জ্ঞানের গভীরতা নিয়ে পাল্টা প্রশ্নও সঙ্গত। কেনো না, চিকিৎসকের কাজ চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে সুস্থ করা। ব্যতিক্রমে তদন্তের দাবি রাখে বৈকি! যদিও অভিযোগ আমলে নেয়ার রেওয়াজটা এখনও সেকেলে।

‌শুধু চুয়াডাঙ্গায় নয় সারাদেশেই ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে, হচ্ছে। কোন কোনটি অনুমোদন পাওয়ার আদৌ যোগ্য না হলেও দিব্যি অনুমোদন পেয়ে যাচ্ছে, আবার অনেক রয়েছে অনুমোদনের ধারই ধারছে না, তারা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগীয় প্রশাসনিক কর্তার কার্যালয়ের আশেপাশেই দেদারছে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এই যখন বাস্তব অবস্থা তখন একটি ক্লিনিকে দফায় দফায় রোগীর অপমৃত্যুর অভিযোগ কতোটুকুই আর গুরুত্ববহন করে?

অবশ্যই একজন রোগীর মৃত্যু মানেই যেমন ভুল চিকিৎসা নয়, তেমনই দায়িত্বশীলদের কতর্ব্য অবহেলাও সর্বক্ষেত্রে দায়ী, তাও বলা যায় না। তা হলে রোগী মারা গেলেই ভুল চিকিৎসা বলে অভিযোগ ওঠে কেনো? অবশ্যই কোথাও কোথাও ভুল চিকিৎসা হচ্ছে, ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়,বহু ক্লিনিকে ঝাড়ুদার সাজছেন সেবিকা, দারোয়ান হচ্ছেন অপারেশন থিয়েটারের সহযোগী। আর ক্লিনিকের ম্যানেজার? তিনি নিজেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেজে বসছেন। এ ধরণের অভিযোগেরও ইয়েত্তা নেই যে সমাজে, সমাজে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুকে কি কোনভাবেই খাটো করে দেখা চলে?

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের এক কোনে সিভিল সার্জনের কার্যালয়। এই হাসপাতাল সড়ক জুড়েই রয়েছে বহু ক্লিনিক, নাসিং হোম, বেসরকারি হাসাপাতাল। এর মধ্যে ইউনাইটেড ক্লিনিকে মাঝে মাঝেই রোগী মারা যায় বলে অভিযোগ ওঠে। গত বুধবার রাতে একজন রোগী মারা গেলে তার স্বজনেরা নানা অভিযোগ করেন। অবশ্য সে অভিযোগ লিখিতভাবে স্বাস্থ্য প্রশাসনের দফতর পর্যন্ত পৌছুয়নি। কেনো? অধিকাংশেই অভিযোগ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করার বদলে লাশের পাশেই অশ্রু ঝরিয়ে বিচারের ভার মহান সৃষ্টি কর্তার ওপর দিয়েই দাফন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সে কারণে অভিযোগ অঙ্কুরেই ঝরে যায়। অনেকে অপচিকিৎসা দিয়েও বেমালুম পার পেয়ে যান। যার কুফল সমাজে সংক্রমিত হয়, হচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের যাচ্ছে তাই অবস্থা মেনে নেয়া যায় না। একজন রোগী হাটতে হাটতে এলেন, পরীক্ষা নিরীক্ষার পর অস্ত্রোপচার করা হলো। বন্ধ হলো না রক্তক্ষরণ। অস্ত্রোপাচারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা গেলেন। অপারেশনে ভুল? নাকি ওষুধ প্রয়োগে? অভিযোগ দফতরে না গলেও পত্রস্থ হলেও ওইসব প্রশ্নের সন্তোষ জনক জবাব খুঁজতেই দরকার তদন্ত।