জ্বালানি তেলের দাম তিন ধাপে কমছে

 

স্টাফ রিপোর্টার: জ্বালানি তেলের দাম তিন ধাপে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রথম ধাপে অকটেন, ডিজেল, পেট্রোল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা কমানো হতে পারে। আগামী সপ্তাহের সোম বা মঙ্গলবারে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি দুই ধাপে তেলের দাম আরো কমানো হবে। সব মিলিয়ে লিটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২২ টাকা কমানো হতে পারে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় তেলের দাম কমানোর পক্ষে মত দিয়েছে। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এবং বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাবগুলো হস্তান্তর করা হয়। তিনি বিপিসি, জ্বালানি বিভাগ ও অর্থ বিভাগের প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে একবারে তেলের দাম না কমিয়ে একাধিক ধাপে মূল্য কমানোর নির্দেশনা দেন।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু গতকাল সোমবার বলেন, ইতোমধ্যে ফার্নেস তেলের দাম কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অন্য জ্বালানি তেলগুলোর দাম তিন ধাপে কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এতে বাজার স্থিতিশীল থাকবে। তিনি জানান, প্রথম ধাপে মূল্য কমানোর ঘোষণা দুই-এক সপ্তার মধ্যেই দেয়া হতে পারে।

দাম কমানোর প্রেক্ষাপট: আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। তখন পেট্রোল-অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল কেরোসিনের দাম ৭ টাকা করে বাড়ানো হয়েছিলো। এরপর ২০১৪ সালের জুন থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে উঠানামা করলেও দেশে তেলের দাম কমানো হয়নি।

জ্বালানি বিভাগসূত্র জানায়, কম দামে তেল কিনে বেশি দামে বিক্রি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ইতোমধ্যে অর্থ বিভাগের দায় ছাড়া সকল আর্থিক দেনা শোধ করেছে। গত অর্থবছরে বিপিসি ৫ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ৭ হাজার কোটি টাকা লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১২ লাখ মেট্রিক টন ক্রুড তেল এবং ৪২ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত তেল আমদানি করা হয়। ৩০ হাজার টন পেট্রোলিয়াম পণ্য দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়।