মৃতদেহ নিয়ে টানাটানি : চিশতিয়া তরিকার ভক্তরা পিরোজপুরে নিয়ে করলেন দাফন

 

স্টাফ রিপোর্টার/মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর শহরের চক্রপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম কোরাইশীর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে পিরোজপুরে দাফন সম্পন্ন করা হয়। মৃতদেহ দাফন নিয়ে তার দু স্ত্রীর লোকজন টানাটানি শুরু করে। শেষ পর্যন্ত তার তরিকার অনুসারীরা মৃতদেহ পিরোজপুরে নিয়ে দাফন করেন।

অনুসারীরা জানান, তিনি মৃত্যুর পূর্বে কোথায় দাফন করতে হবে, তা বলে গেছেন। তার ইচ্ছে অনুযায়ী এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে দাফন করা হয়। অপরদিকে প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের অভিযোগ, আমার আব্বাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে অনেকটা গায়ের জোরেই পিরোজপুরে নিয়ে দাফন করা হয়েছে।

জানা গেছে, আবুল কাশেম কোরাইশী রাজশাহীর মৃত আলহাজ কোরাইশীর ছেলে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মেহেরপুরের গাংনীতে আসেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মেহেরপুর মালসাদহে বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর রয়েছে এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে বর্তমানে সিঙ্গাপুর প্রবাসী। মেয়ে আফরোজা পারভীন চুয়াডাঙ্গা হকপাড়ার বাসিন্দা। তিনি এসব তথ্য দিয়ে বলেছেন, আমার মা মারা গেলে আব্বা মেহেরপুরের বামনপাড়ায় বসবাস করতেন। হোমিও চিকিৎসা দিতেন। গাংনী কমান্ডার হোমিও হলে বসে তিনি পরশু দায়িত্বও পালন করেন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। রাতে খবর দেয়া হয় আব্বা মারা গেছে। এ খবর পেয়ে লাশ নিতে গেলে আমাকে দেয়নি।

মৃত্যুকালে আবুল কাশেমের বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। গত সোমবার দিনগত মধ্যরাতে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বলে জানিয়েছেন দ্বিতীয় স্ত্রীসহ তাদের নিকটজনেরা।

সকাল ১০টার দিকে মেহেরপুর শহীদ ড. সামসুজ্জোহানগর উদ্যানে তার লাশের গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঈনুল হাসান রাষ্ট্রের পক্ষে সালাম গ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বশির আহমেদ, ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলতাফ হোসেন, গাংনী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ মুনতাজ আলী, সাবেক কমান্ডার সামছুল আলম সোনা, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল আজিজ, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, পিরোজপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইদ্রিস আলী প্রমুখ। এরপর সেখানে দু পক্ষ লাশের দাবিদার হলে উত্তেজনা দানা বাঁধে। পরে তার লাশ চিশতিয়া তরিকার ভক্তরা সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামে নেয় এবং ওই গ্রামে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।