চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হুইপ ছেলুন জোয়ার্দ্দার এমপি

নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে

আলম আশরাফ: মার্চ মাস বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে সাফল্যমণ্ডিত ও তাত্পর্যপূর্ণ একটি মাস। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও দখল থেকে মুক্ত করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয় এ মাসে। এ মাসের প্রতিটি দিন ছিলো ইতিহাসের একেকটি অধ্যায়। পুরো মার্চ মাস স্বাধীনতাকামী ও মুক্তিপাগল বাঙালি রাজপথ উত্তাল করেছে। বঙ্গবন্ধু সুশৃঙ্খল ও সাংবিধানিকভাবে এ সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। উপরোক্ত কথা গুলো বলেন জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি।

তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ইয়াহিয়া-ভুট্টোর চক্রান্ত প্রতিরোধে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সারাদেশে শুরু হয় ব্যাপক অসহযোগ আন্দোলন। ‘পাকিস্তানে লাথি মারো, স্বাধীন বাংলা কায়েম করো’এই স্লোগান সামনে নিয়ে সেদিন দেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে রাজপথে। বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের সফলতা হলো তিনি পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে বেগবান করেন।

হুইপ ছেলুন বলেন, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি মেধা ও মনের বিকাশ ঘটায়। সুস্থ দেহ ও সুন্দর মনের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। খেলাধুলার মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে একটি জাতির পরিচিতি যতো দ্রুত তুলে ধরা যায় অন্য কোনো মাধ্যমে অতোটা দ্রুত সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে। বর্তমান সরকারও পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে এ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। আজ যারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বিক্রিত করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের দাড়াতে হবে। তা হলেই সমাজ থেকে এ ধরনের লোকদের নিপাত ঘটবে। শিক্ষার্থীদের মেধা ও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করছে বর্তমান সরকার। শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে সে ধরনের সুযোগই তৈরি করছে বর্তমান সরকার এবং শিক্ষার মান যাতে আরো উন্নত করা যায় সে ব্যাপারে কাজ করছে আওয়ামী সরকার। বছরের প্রথম দিনেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হচ্ছে। জাতিকে শিক্ষিত করার জন্য বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৫ বছরের চুয়াডাঙ্গা যে উন্নয়ন হয়েছে বিগত ৪০ বছরেও সে উন্নয়ন হয়নি। যারা ৭১ ষড়যন্ত্র করেছে আজও তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা এখন মানুষ পুড়িয়ে মারছে। তাদেরকে উৎখাত করতে হবে। সেই রাজাকার আলবদররা আজও ষড়যন্ত্র করে আসছে। সেই সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার ৩৩টি ইভেন্ট ও দিবা শাখার ৩৩টি ইভেন্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুন নাহারের আয়োজনে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, সাবেক অধ্যক্ষ এসএম ইস্রাফিল, সিদ্দিকুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আব্দুর রাজ্জাক, জেলা শিক্ষা অফিসার আজহার আলী, ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনি মোহন বিশ্বাস প্রমুখ। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান উপস্থপনা করেন লামিয়া হাসান বর্ষা, আনিকা আনজুম প্রমা ও নুসরাত নুর নাদিয়া। পুরস্কার বিতরণ শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Leave a comment