আগুনে ঝলসে যাওয়া স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় গেলেন নির্যাতক স্বামী সিরাজ

 

স্টাফ রিপোর্টার: আগুনে ঝলসে যাওয়া শাবানা খাতুনকে অবশেষে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়েছে। ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টার মাথায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পৌরসভার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে নেয়া হয়েছে। সাথে গেছেন নির্যাতক স্বামী সিরাজ।

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার পীরপুরকুল্লার যে সিরাজুল ইসলাম সিরাজের কারণে শাবানা খাতুন মাত্র ১১ মাসের শিশুসন্তান রেখে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়েছে, সেই সিরাজ ছাড়া তার সাথে ঢাকায় যাওয়ার আর কাউকেই পাওয়া যায়নি। কেন? কারণ ওই সিরাজ। ভাই ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা। সেই দাপটে পড়শিদের তেমন কাউকেই তোয়াক্কা করে না। দ্বিতীয় স্ত্রী শাবানাকে কথায় কথায় মারপিট করতো। গতপরশু সারাদিনই মারপিট করে ঘরে আটকে রাখে। মাঝরাতে ঘটে শাবানার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরানোর ঘটনা। সিরাজই তার দ্বিতীয় স্ত্রীর শরীরে আগুন ধরিয়েছে? নাকি শাবানা নিজেই শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছেন? এসব প্রশ্নের জবাব গতকাল পর্যন্ত ছিলো কুয়াশাচ্ছন্ন। যদিও গতপরশু মধ্যরাতে হাসপাতালে নেয়ার পর শাবানা নিজেই গায়ে আগুন ধরিয়েছে বলে জানিয়ে বাঁচিয়ে তোলার আকুতি জানান। অপরদিকে তার স্বামী সিরাজ ঘটনা আড়াল করতে একবার জিনকে দোষারোপ করে, আর একবার অসাবধানতায় ল্যাম্পের আগুন গায়ে ধরে গেছে বলে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার অপচেষ্টা চালাতে থাকে।

উল্লেখ্য, প্রথম স্ত্রী সন্তান রেখে সিরাজ ঢাকায় গিয়ে ৪ বছর আগে বিয়ে করে মিরপুরের মণিপুরীপাড়ার শাবানার সাথে। কিছুদিন ঢাকা বসবাস করে পীরপুরে ফেরে সিরাজ। প্রথম স্ত্রী ফিরে যায় তার পিতার বাড়ি মদনা। গতপরশু রাতে ঘটে দ্বিতীয় স্ত্রীর শরীরে আগুন লাগার ঘটনা। আগুন নেভাতে গিয়ে সিরাজের দু হাত সামান্য অগ্নিদ্বগ্ধ হলেও সিরাজ অবশ্য তার স্ত্রীর চেয়ে বেশি কাতরাতে থাকে। অপরদিকে পরশু রাতেই শাবানাকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হলেও গতকাল সকাল থেকে নানা নাটক করতে থাকেন সিরাজ। পরে সন্ধ্যায় অগ্নিদগ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।