শুধু প্রতীক নয় প্রার্থীদের যোগ্যতাও ভোটাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ

 

মুজিবনগর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আগামী ৩১ মার্চ ভোটগ্রহণ। চেয়ারম্যান পদে বড় দুই দলের দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীসহ মেম্বার প্রার্থীরা এখন প্রচারণায় ব্যস্ত। এই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা বেশ উৎফুল্ল। তবে ভোটাররা বলছেন, শুধু দলীয় প্রতীক হলেই বিজয় নিশ্চিত নয়, প্রার্থীদের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের ওপরেই ভোটের ফলাফল প্রভাব পড়বে।

স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের শুধু দলীয় প্রতীকের ওপর ভর করে বিজয় আসবে না। প্রার্থীদের প্রতীকের পাশাপাশি আচার-আচরণ, কর্মকাণ্ড, গুণাবলী এবং আত্মীয়স্বজনদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিজয়ী হতে বড় ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে যে প্রার্থীরা ইউপি চেয়ারম্যান পদে বহাল রয়েছেন তাদের পুনর্বিজয়ের ক্ষেত্রে দায়িত্বকালের কর্মকাণ্ড প্রধান ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করছেন ভোটাররা।

চারটি ইউটিতে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদের প্রার্থীরাও নির্বাচনী প্রচারণায় কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল এবং আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপির এক বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় এখন পর্যন্ত ৭ বিদ্রোহীসহ মোট ২০ প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এদিকে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪২ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ১২৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

মুজিবনগরের চার ইউনিয়নের মধ্যে মহাজনপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মুজিবনগর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আহসান হাবীব সোনা, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুজিবনগর উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মিসকিন মোহাম্মদ ও বিএনপি সমর্থক তোফাজ্জেল হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে রয়েছেন।

বাগোয়ান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়ুব হোসেন, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মানজারুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতের কোষাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মোনাখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফা গাইন, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিমুদ্দিন গাজী, মুজিবনগর উপজেলা জামায়াতের সেক্রটারী খাঁনজাহান আলী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোল্লা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নাগরিক ঐক্যজোটের ব্যানারে যুবলীগ নেতা মফিজুর রহমান মাঠে রয়েছেন।

দারিয়াপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অ্যাড. কলিম উদ্দিন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি আনছারুল হক কাঠু, জেলা জাতীয় পার্টি (জে.পি) যুগ্ম সম্পাদক মওলাদ আলী খান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি তৌফিকুল বারী, আওয়ামী লীগ সমর্থক হাশেম আলী, প্রার্থী বিএনপি সমর্থক আশাদুল হক ও জামায়াত নেতা আওলাদ হোসেন নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।

দু দলেরই দলীয় প্রার্থীরা বলেছেন, বিদ্রোহী প্রার্থীরা তাদের বিজয়ের ক্ষেত্রে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। কারণ ভোটাররা ভোট দেবে দলীয় প্রতীক দেখে। তবে ভোটারদের অনেকেই প্রার্থীদের বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন, শুধু দলীয় প্রতীক দেখে বিজয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাব, আত্মীয়তা, বর্তমান চেয়ারম্যানদের পূর্বের কর্মকাণ্ড, দলীয় কোন্দলসহ বিভিন্ন সমীকরণ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত এসব প্রতিবন্ধকতা কিংবা প্রতিকূল পরিবেশ যে প্রার্থী মোকাবেলা করে ভোটারদের মন জয় করতে পারবেন সেই বিজয়ী হবেন বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তবে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।