শুধু বাতাসটুকু তাদের !

 

স্টাফ রিপোর্টার: পল্লী বিদ্যুতের একজন বৈধ গ্রাহক হতে চান? তাহলে আপনাকে একটি স্ক্রু থেকে শুরু করে সবই কিনতে হবে। তাও আবার এলাকা ভিত্তিক মাঠ পর্যায়ের পল্লী বিদ্যুতের নামধারী মিস্ত্রীদের মাধ্যমে। তা নাহলে আপনার ভাগ্যে বিদ্যুত নামের সোনার হরিণ পেতে হলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে। এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের কুন্দিপুর বেলেমাঠপাড়ার ২৩ জন পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকের ভাগ্যে।

অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের কুন্দিপুর বেলেমাঠপাড়ায় ২৩ জন পল্লী বিদ্যুতের নতুন গ্রাহক দেড় মাস আগে সোনার হরিণ নামক বিদ্যুত সংযোগ পান। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি গ্রাহকের নিকট থেকে ৭ হাজার ২০০ টাকা এবং সাথে বকশিস ৩শ টাকা করে বিভিন্ন দফতর ম্যানেজ করার নাম করে প্রায় ১লাখ ৭২ হাজার টাকা কালেকশন করেন শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুতের কথিত মিস্ত্রী আসাদুল। এর মধ্যে ১০ কেবির  ট্রান্সমিটার কেনা বাবদ ৯২ হাজার টাকার হিসাব দেয় আসাদুল। দুঃখজনক হলেও সত্য দেড় মাসের মাথায় নতুন লাগানো ট্রান্সমিটারটি কয়েকদিন আগে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে কুন্দিপুর বেলেমাঠপাড়ার ওই ২৩ জন গ্রাহক বিদ্যুতের বাতি জ্বালানো থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এখন আবার ট্রান্সমিটার লাগানোর জন্য গ্রাহক প্রতি ৫শ টাকা করে দাবি করছে আসাদুল। পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ পেতে সামান্য কিছু টাকা লাগার কথা থাকলেও ৫০ পয়সার স্ক্রু থেকে শুরু করে সবকিছুর জন্যই টাকা দিতে হয় গ্রাহককে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গ্রাহক জানালেন, পল্লী বিদ্যুতের কাছে মানুষ আজ জিন্মি। কারণ বিদ্যুত অতি প্রয়োজনীয়। আর এ সুযোগে পল্লী বিদ্যুতের জোনাল এবং সাব জোনাল অফিসের সাথে সখ্য রেখে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে মিস্ত্রী নামক অসংখ্য দালাল চক্র। তাই পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ নিতে হলে প্রত্যেককে ওই সব দালালের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ ব্যয় করার পর ভাগ্যে জোটে বিদ্যুত সংযোগ। যেখানে সবকিছুই একজন গ্রাহকের। অন্য একজন গ্রাহক রসিকতা করে বললেন, সবকিছুই আমাদের শুধু বাতাসটুকু তাদের (পল্লী বিদ্যুত)।

এ বিষয়ে জালশুকা গ্রামের কথিত মিস্ত্রী আসাদুলের সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।  গ্রাহক হয়রানি না করে সরকার সর্বত্রই বিদ্যুত সংযোগ পৌঁছুনোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণে তা হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ। তাই পল্লী বিদ্যুতের হয়রানির হাত থেকে যাতে গ্রাহকরা মুক্তি পায় সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবে এমনটাই দাবি ভুক্তভোগী মহলের।