আজ ১৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিন। সারাদেশে দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবেও উদযাপিত হচ্ছে। সংবাদপত্র প্রকাশ করেছে ক্রোড়পত্র। টিভিগুলোতে সম্প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান।
১৯২০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। বড় হয়ে এই সাহসী ছেলেটিই তৎকালীন পাকিস্তানের নব্য ঔপনিবেশিক ও দাসত্বের শেকল থেকে জাতিকে মুক্ত করেন। হাজার বছরের আরাধ্য ও প্রত্যাশিত স্বাধীন-সার্বভৌম ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং স্বাধীকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদান অবিস্মরণীয়। জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাকে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রতিটি ধাপেই তিনি বাঙালির সার্বিক মুক্তির জয়গান গেয়েছেন। যৌবনের অধিকাংশ সময় তাকে কাটাতে হয়েছে জেলহাজতে। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তিনি বলেছেন, ‘আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা’।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর জন্মদিনটি ভারতে ‘শিশুদিবস’ হিসেবে পালিত হয়। অন্যদিকে একটি স্বাধীন দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিও আমাদের দেশে পালিত হচ্ছে শিশু দিবস হিসেবে। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ প্রথমবারের মতো এই দিনটি শিশু দিবস হিসেবে উদযাপিত হয় সরকারিভাবে। ২০০১ সালের পর মধ্যখানে চার দলীয় জোট সরকারের হস্তক্ষেপে এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত না হলেও দলীয় ও বেসরকারিভাবে উদযাপিত হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এই দিনটিও আগের মতো যথাযথ মর্যাদায় উদযাপিত হয়ে আসছে। বর্তমানে দেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৬ কোটিই শিশু। শিশুদের উন্নয়ন ব্যতীত বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়ন অসম্ভব। উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখতে হলে অবশ্যই শিশুদের সমস্যার সমাধানে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অবাক হলেও সত্য যে শিশু অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড বেড়েছে, তাতে জাতি আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন বটে। শিশু অধিকারও নানাভাবে পদদলিত হচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জে এখনও শিশুর অপুষ্টি একটি প্রধান সমস্যা। এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য ঘরে-বাইরে শিশুর নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা দরকার।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে আজকের শিশুদেরই সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে তথা জাতীয় শিশু দিবসে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হোক সকলের অঙ্গীকার। গড়ে উঠুক স্বপ্নের সোনার বাংলা।