রফিকুল ইসলাম: দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রাজ্জাক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফুল আলম ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা সাইফুল ইসলাম। সভায় রিটানিং কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউল্লাহ ও আব্দুল্লাহ আল সামী উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়সভায় জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস বলেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থীরা সহনশীলতার পরিচয় দেবেন। অন্য প্রার্থীদের প্রচারে সুযোগ দেবেন। নির্বাচন কমিশনের দেয়া আচরণবিধি মেনে চলবেন। নির্বাচনে মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো শঙ্কা ছাড়াই ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন এবং ভোট দিতে পারবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা এ আশ্বাস আপনাদেরকে দিচ্ছি।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে ৮জন অস্ত্রধারী পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০ জন সদস্য অবস্থান করবে। ভোটকেন্দ্রে অবৈধ কোনো কিছু কেউই করতে যাবেন না। ভোটকেন্দ্রে আসা যাওয়া মানুষের কোনো সমস্যা হবে না। ইউনিয়ন এলাকায় কোনো অপরিচিত লোক দেখলেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানাবেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আত্মীয়-স্বজনদেরকে বাড়িতে রাখবেন না। প্রশাসনের দিক থেকে কোনো অভিপ্রায় নেই। কোনো কিছু হলে প্রশাসন চোখ বন্ধ করে থাকবে না। বিগত নির্বাচনের চেয়েও এবার ইউনিয়ন পর্যায়ে ভালো নির্বাচন উপহার দেবো।
সভায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দাবি করেন, ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পাঠালে ভালো হয়। কেউ যেন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে প্রশাসনকে নজর রাখার দাবি করা হয়। কোথাও কোথাও বিলবোর্ড অপসারণ হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়। এছাড়া, সীমান্তবর্তী এলাকায় অপরিচিত লোকের চলাফেরা বন্ধের দাবি করা হয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন প্রার্থীরা।
মতবিনিময়সভায় সদর উপজেলার ৪ ইউনিয়নের এক নারী প্রার্থীসহ ২০ চেয়ারম্যান, ৩৩ সংরক্ষিত সদস্য এবং ১২৪ জন সাধারণ সদস্য পদের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। আগামী ৩১ মার্চ আলুকদিয়া, মোমিনপুর, পদ্মবিলা ও কুতুবপুর ইউপির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে আলুকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫ ভোটযুদ্ধে লড়ছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী আক্তাউর রহমান মুকুল (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ইসলাম উদ্দিন (আনারস), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. আব্দুল মজিদ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী জুলফিকার আলী কলি (লাঙ্গল) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মো. আলিমুজ্জামান (হাতপাখা) প্রতীকে আবেদন করেছেন।
মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়ছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেফালী খাতুন (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার (ঘোড়া), বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান শেখন (আনারস) এবং জামায়াত ইসলামীর স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমান জোয়ার্দ্দার (চশমা)।
পদ্মবিলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪ প্রার্থী লড়ছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবু তাহের বিশ্বাস বিশ্বাস (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সেলিম মল্লিক (আনারস), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আতিয়ার রহমান (ধানের শীষ) এবং জামায়াতে ইসলামীর বিল্লাল হোসাইন (চশমা) প্রতীক পেয়েছেন।
কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬ প্রার্থী লড়ছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সাবেক চেয়ারম্যান শাখাওয়াৎ হোসেন (আনারস), এসএম ফিরোজ কবীর (চশমা) ও আসাদুল হক (মোটরসাইকেল), বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম (ধানের শীষ) ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মজিদ (রজনীগন্ধা)।