থানায় অভিযোগ করার কারণে গাছের সাথে বেঁধে প্রকাশ্যে কাটা হলো গৃহবধূর চুল

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: ইটভাটায় কাজ করার সুবাদে স্বামী বাড়িতে থাকেন না। সেই সুযোগে প্রায়ই স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করতো পাড়ার বখাটেরা। উত্ত্যক্ত বন্ধে গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ আটকও করে প্রভাবশালী দুজনকে। রাতে আটকের পর সকালে সবাই ছাড়া পায়। কিন্তু থানায় অভিযোগের কারণে তারা ওই গৃহবধূকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মাথার চুল কেটে মুখে চুন-কালি মাখিয়ে দেয়। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। গৃহবধূকে রাস্তার পাশে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এসব ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার হিলালপুর গ্রামে।

জানা গেছে, গত সোমবার সকালে থানা থেকে ছাড়া পাওয়া প্রভাবশালী তৌহিদ ও সুমন এবং তার আরো ৬ সহযোগী উপজেলা সদরের হিলালপুর গ্রামের দরিদ্র গৃহবধূ তিন সন্তানের জননী সামেলা খাতুনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। সকাল ৯টার দিকে কয়েকশ লোকের সামনে গৃহবধূর বাড়ির পাশের মশুরির ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গৃহবধূর ওপর নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে তার মাথার চুলও কেটে দেয়া হয়। পরে সাবেক মেম্বার আশকার আলীর বাড়ির সামনে একটা গাছের সাথে প্রায় এক ঘণ্টা বেঁধে রাখা হয় তাকে। গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গৃহবধূর স্বামী মিন্টু শেখ যশোরের একটি ইটভাটায় কাজ করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ সামেলা জানান, গত কয়েকদিন আগে হামলাকারী তৌহিদ ও সুমনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনার পর রোববার রাতে পুলিশের এসআই কার্তিক চন্দ্র দুই আসামিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন সোমবার সকালে আসামিরা থানা থেকে ছাড়া পেয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। তাকে চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে মাঠের মধ্যে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে তার মাথার চুল কেটে দেয়। এছাড়া তার সমস্ত শরীরে চুন ও কালি মাখিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে তাকে রাস্তার পাশে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়।

তিনি আরো জানান, থানার ওসি তাকে থানায় নিয়ে যান এবং মামলার কথা বলে একটি শাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ওসি তাকে সাফ জানিয়ে দেন মামলা করে কোনো লাভ হবে না। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয় কিন্তু প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি।