চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দু দিনে ভর্তি ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে দুশ্চিন্তা

 

 

মহিলা ওয়ার্ডের সৌচাগারে পানি নেই আলো নেই : পুরুষ ওয়ার্ডে অপরিষ্কারে ব্যবহার অযোগ্য : দুর্ভোগ চরমে

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। হাসপাতালে যেমন নেই কলেরা স্যালাইন, তেমনই ওয়ার্ড দুটির সৌচাগারের করুণ দশায় ডায়রিয়া রোগীদের দুর্ভোগের আর শেষ নেই। অথচ হঠাত করে চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গতকালও অর্ধশতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত নারী-পুরুষ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ দিয়ে গতপরশু ও গতকাল ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পৌনে একশ পেরিয়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গত দু দিনে ও রাতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তির ধরণ দেখে অনেকেরই স্মৃতিপটে ভেসে উঠেছে দেড় বছর আগের ভয়াবহ চিত্র। সেবার চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কয়েকটি মহল্লায় গণহারে ডায়রিয়া দেখা দেয়। পরীক্ষা-নীরিক্ষায় পৌর সরবরাহকৃত পানিকেই দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা। এবার? গত দু দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তির ধরণ দেখে আগে ভাগেই পৌর সরবরাহকৃত পানি পরীক্ষা করা দরকার বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গতপরশু রাত ১২টা পর্যন্ত ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয় ৪০ জন। গতরাত সাড়ে ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকালও ভর্তি হয়েছে প্রায় ৫০ জন। এ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় গতরাতে ৯২ জন। অথচ ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৩২ জন। ফলে উপচেপড়া রোগী নিয়ে সেবিকাসহ সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হয়েছে। রোগীদেরও পড়তে হয়েছে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে। হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন একাধিক ডায়রিয়া আক্রন্ত রোগী বলেছেন, বাথরুমে না আছে পানি, না আছে আলো। ডায়রিয়া রোগীদের একটি স্যালাইনও দেয়া হচ্ছে না, অথচ ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়া রোগীদের অভিযোগ, সুস্থ মানুষও এখানে এলে রোগী হতে বাধ্য। বাথরুম যে কতো অপরিষ্কার তা ভাষায় বর্ণনা করে বোঝানো কঠিন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই স্যালাইন নেই। গত কয়েক দিনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি বেসামাল হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত যে সকল রোগী ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে সুমিরদিয়ার ৫ জন, মাঝেরপাড়ার ৪ জন, সিঅ্যান্ডবিপাড়ার ৩ জন, বেলগাছির ২ জন, জিনতলাপাড়ার ২ জন, মাঝেরপাড়ার ২ জন, কানাপুকুরপাড়ার ২ জন। পরশু ভর্তি ৪০ জন রোগীর অধিকাংশই ছিলো পৌর এলাকার। তবে দেড় বছর আগে যেভাবে একই এলাকায় ব্যাপকভাবে ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিলো এবার তেমনটি নয়। ফলে সরবরাহকৃত পানি নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কারণ নেই।

Leave a comment