চাকরি দাবিতে ইবিতে ফের প্রধান ফটকে তালা

 

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিয়োগ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। গতকাল শনিবার তারা চাকরির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এক ঘণ্টা তালাবদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। চাকরি প্রত্যাশীদের আন্দোলনের কারণে চরম বিপাকে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তালা ভেঙে ফেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির জন্য গতকাল শনিবার আবারো প্রধান ফটকে তালা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা। দুপুর 2টায় তৌফিকুর রহমান হিটলার, আশিকুর রহমান জাপান, কাশেম মাহমুদ, মিজানুর রহমান টিটু, আরব আলী, রাসেল জোয়াদ্দার, ইলিয়াস জোয়ার্দ্দার, মাহবুবুর রহমান, লিটন, শফিকুর রহমানসহ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা প্রধান ফটকে তালা দেন। এ সময় প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী বহনকারী বাস চলাচলে বাধা দেন তারা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তানিয়া সুলতানা বলেন, আমদের প্রায় সময় এই সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে কেন আমার জানা নেই। কিন্তু গুটিকয়েক লোকের কারণে ১৪ হাজার শিক্ষাথী ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ অবস্থায় চাকরি প্রত্যাশীদের সাথে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্য কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার, উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম আব্দুল লতিফ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাকরি প্রত্যাশীদেরকে তালা খুলে দিতে বললে তারা তা করতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের নির্দেশে আনসার সদস্যরা তালা ভেঙে ফেলেন এবং পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক করে হয়।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, তালা লাগানোর পরে তাৎক্ষণিক তাদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে। এখন ক্যাম্পাস স্বাভাবিক রয়েছে।

এ বিষয়ে চাকরি প্রত্যাশী আশিকুর রহমান জাপান বলেন, রাজনীতির কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় জড়িত। তাই এলাকার বাইরে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দলের কারণে যেহেতু আমাদের সব শেষ হয়েছে তাই তাদেরকে আমাদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও দীর্ঘদিন ধরে চাকরির অশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন তাদেরকে চাকরি না দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের লোকদের চাকরি দেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, তালা ভেঙে ফেলে বাস চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়া হয়। এ বিষয়ে কথা হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো পদে নিয়োগের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জরি কমিশন থেকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞ উঠিয়ে নিলে আমরা তাদের বিষয়টি বিবেচনায় নেবো বলে জানিয়েছি।