ডিউটি বাদে পুলিশের ঘুম : বিদেশ ফেরত যুবক পেরেকবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুরে হাতে পায়ে পেরেকবিদ্ধ অবস্থায় সুজন (২৮) নামের এক বিদেশ ফেরত যুবককে উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। স্থানীয়রা রোববার রাত সাড়ে ১০টায় হাতে-পায়ে পেরেকবিদ্ধ অবস্থায় উপজেলার আমলা ইউনিয়নের চৌদুয়ার-কচুবাড়িয়া মাঠের পাশে খালের কিনারা থেকে তাকে উদ্ধার করে। আহত সুজন পার্শ্ববর্তী কচুবাড়িয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে সে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতার আশায় দু মাস আগে সুজন একই গ্রামের মৃত কাশেম মণ্ডলের ছেলে আদমব্যবসায়ী বদরুল মণ্ডলের (৪৫) মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা খরচ করে কাতারে যান। কাতারে গিয়ে সুজন জানতে পারেন আদমব্যবসায়ী তাকে ভিসার মেয়াদ ৩ বছর বলে বিদেশ পাঠালেও ভিসার মেয়াদ রয়েছে মাত্র ৩ মাস। ভিসার মেয়াদ না থাকায় সুজন ২০ মার্চ কাতার থেকে বিকেল ৫টায় ঢাকা পৌঁছায়। বিমানবন্দরে নেমে সুজন তার স্বজনদের জানান, রাত ১১টার কোচে সে বাড়িতে ফিরছে।
একুশে ফেব্রুয়ারি ভোরে সুজনের বাড়িতে ফেরার কথা থাকলেও সময়মতো বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের স্বজনদের মধ্যে চরম উদ্বেগ শুরু হয়। হঠাৎ রাতে সুজন মোবাইলফোনে তার পরিবারের কাছে জানান, আমি কচুবাড়িয়া মাঠের মধ্যে আছি। তারপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে সুজনের স্বজনদের সাথে এলাকাবাসী উল্লেখিত স্থান থেকে তার শরীরে অসংখ্য জখমের চিহ্ন ছাড়াও দু হাত, দু পায়ে ৪টি পেরেকপোতা, সংজ্ঞাহীন এবং গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তার হাতে ও পায়ে বিদ্ধ থাকা ৪টি পেরেক অপসারণ করেন। এ ব্যাপারে আমলা ক্যাম্পের এসআই টিপু সুলতান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে তদন্ত না করে কিছুই বলা যাবে না।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়কে দিনদিন বেড়েই চলেছে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। বিশেষ করে মিরপুর থেকে খলিশাকুণ্ডি পর্যন্ত। এর জন্য নিমতলা বাজার থেকে প্রত্যেক রাতে কাতলামারী মাঠ পর্যন্ত টহল দেয় আমলা পুলিশ ক্যাম্প। তবে গত রাতে ক্যাম্পের এসআই টিপু সুলতানের টহল ডিউটি থাকা সত্ত্বেও তিনি ক্যাম্পে ঘুমাচ্ছিলেন এবং নিমতলা পর্যন্ত টহল দেয়নি আমলা ক্যাম্প। ডিউটি বাদে ঘুমানোর কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রতিরাতে তো আর ডিউটি করা যায় না….।