খাইরুজ্জামান সেতু: চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী ঠাকুরপুর মসজিদের বার্ষিক ইছালে সওয়াব আগামীকাল বুধবার। ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিবছরের ১২ ফাল্গুন বার্ষিক ইছালে সওয়াব ও হালকায়ে জিকিরের আয়োজন করা হয়। এ মসজিদ নিয়ে রয়েছে নানানজনের নানা কল্পকথা। তবে কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেন না এ মসজিদের মূলকাহিনী।
চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঠাকুরপুর গ্রাম। প্রতিবছরের ১২ ফাল্গুন বার্ষিক ইছালে সওয়াব ও হালকায়ে জিকির তথা বার্ষিক ওরশের আয়োজন করে এলাকাবাসী। খাতা-কলমে এবার ৯০ বছর হলেও প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান প্রায় ৩শ বছরেরও অধিক সময় ধরে হয়ে আসছে এ আয়োজন। কালক্রমে অবশ্য নাম পরিবর্তন হয়। স্থানটি বর্তমানে পীরগঞ্জ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এই নাম পরিবর্তন অবশ্য স্থানীয়দের প্রচেষ্টারই ফসল। ঠাকুরপুরের নাম পীরগঞ্জ করার আড়ালে নিহিত রয়েছে ওই বিশাল আকৃতির গম্বুজ মসজিদটি। ইসলামধর্ম প্রচার করার জন্য যুগে যুগে এলাকায় আলো ছড়িয়েছেন যারা, তাদেরই একজন ছিলেন আফু শাহ্। নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও ১৬৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাথাভাঙ্গা, নবগঙ্গা বেয়ে তিনি যে স্থানটি পছন্দ করে নোঙর গাড়েন, মালপত্র নামিয়ে আস্তানা গড়ে তোলেন, সেই স্থানটির নাম তখন ছিলো ঠাকুরপুর, এখন পীরগঞ্জ। এখানেই রয়েছে বড় গম্বুজের মসজিদ। হযরত আফু শাহ ছিলেন সাধক পুরুষ। গুণীজন। তাকে নিয়ে বহু কিংবদন্তী রয়েছে। কথিত রয়েছে তারই বিশেষ গুণে মসজিদটি এক রাতেই নির্মিত হয়। এ মসজিদের মূল কাঠামো অক্ষুন্ন রেখেই পরবর্তীতে সংস্কার করা হয়। সম্প্রসারণের পাশাপাশি আধুনিকায়নেরও ছোঁয়া লেগেছে বিভিন্ন সময় দায়িত্বে থাকা কমিটির নেতৃবৃন্দের বিশেষ উদ্যোগে। প্রধান ফটকটি টাইলস দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে যেমন, তেমনই মসজিদের অভ্যন্তরেও লাগানো হয়েছে টাইলস, তৈরি করা হয়েছে ২য় তলা পর্যন্ত। বর্তমান কমিটি ঠাকুরপুরের নাম পীরগঞ্জ করার আড়ালে নিহীত যে বিশাল আকৃতির গম্বুজ মসজিদটি রয়েছে তার আদলে আর একটি গম্বুজ ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য আরো একটি গম্বুজ তৈরি করেছে। প্রতিবারের মতো এবছরেও আয়োজন করা হয়েছে ইছালে সওয়াব ও হালকায়ে জিকিরের। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকছেন ঈশ্বরদী বাজার ব্যবসায়ী জামে মসজিদের খতিব পীরজাদা হযরত মাওলানা মো. হাবীবুল্লাহ কাওছার বিন হায়দারী। দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে থাকছেন চ্যানেল নাইনের ধর্মীয় আলোচক এইচএম ইব্রাহিম খলিল জিহাদী।