জহির রায়হান সোহাগ: চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে নানান রোগের প্রকোপ বেড়েছে। মাত্র এক সপ্তার ব্যবধানে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় সর্দি, কাশি, শ্বাসজনিত সমস্যা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীর ভিড় বেড়েছে। হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডের মেঝে, বিছানাসহ সর্বত্র রোগীর ভিড়। চুয়াডাঙ্গা জেলার তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠা-নামা করছে বলে জানিয়েছে আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস। তবে শুধু শিশু ওয়ার্ডই নয়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সী রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। যাদের প্রায় সকলেই আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি নিয়ে এসেছেন। রোগীর চাপ বাড়ায় পরিস্থিতি সামলাতে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গতকাল সোমবার সকালে দেখা যায়, শিশুর মায়েরা শিশু কোলে নিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। অধিকাংশ মায়েদের জিজ্ঞেস করলে বলেন, হঠাৎ গরমে শিশুর সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে। তাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে এসেছি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে গত এক সপ্তায় সবচেয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। ভর্তি হয়েছে ওয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতার বেশি শিশু। গতকাল শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ২০ শিশু। এছাড়া কয়েক দিন ধরে ভর্তি রয়েছে আরও ৪৭ জন। ১৩টি বেডের বিপরীতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশুওয়ার্ডে বর্তমানে প্রায় ৫ গুণের বেশি শিশু ভর্তি রয়েছে। ফলে চিকিৎসক ও নার্সদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন মাথাভাঙ্গাকে জানান, হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। শিশুদের ঠিকমতো টিকা প্রদান ও ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হলে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাছাড়া ডায়রিয়া একধরনের পানিবাহিত রোগ। রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ৬-১৬ মাস বয়সী আক্রান্ত শিশুকে ঘন ঘন স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। শিশুদের মায়ের বুকের দুধ ও রোটারিক্স টিকা দিলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এছাড়া জ্বর, সর্দি ও কাশির ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়াতে হবে।