যদি ভালোবাসা পায় প্রকৃতি, নিশ্চয় স্থায়ী হবে ধরিত্রী
প্রকৃতিকে ভরপুর করে হাজির আজ বসন্ত। দিনপঞ্জিকার পাতায়ই শুধু নয়, ফাগুনে দক্ষিণা এসে হিমালয়ের হিমেল হাওয়া ফিরিয়ে দিয়ে রুক্ষ শুষ্ক ত্বকে শুকনো ঠোঁটে যেন মাখিয়ে দেয় মৃদু জলীয় বাষ্প। শীতের ঝরা পাতাতেই লুকিয়ে থাকে বসন্তের আগমন। আর কোকিল, কোকিলের কুহুতান? অবশ্য নিজেরাই নিজেদের তেমন মনোমুগ্ধ পরিবেশের ওপর একের পর এক আঘাতে করে চলেছি ক্ষতবিক্ষত। ফলে অতোটা নেই, যতোটা ছিলো আগের মতো অপেক্ষার বসন্ত।
অবশ্যই বসন্ত শুধু মানুষের নয়, ক্ষুদ্র অতিক্ষুদ্র কীট পতঙ্গেরও। নতুন পাতা-পল্লবের মঞ্জুরিত ও সাড়ম্বর জানিয়ে দেয় বসন্ত সার্বজনীন। জগতের সকল প্রাণীর। যদিও বসন্তের মাহেন্দ্রযোগে প্রাণের উচ্ছ্বাসের সাথে দুর্ভোগও হানা দিতে পারে উত্তর-পশ্চিমে জমাট বাঁধা মেঘ। এরপরও বসন্ত যে ঋতুরাজ তা কি অস্বীকার করা যায়? কেননা, বসন্ত হৃদয়ে নতুন তুলির পেলব স্পর্শে সবচেয়ে সুন্দর ছবিটাই আঁকে। শীতের সাথে বিষণ্নতা, পাতাঝরা সমাপ্তির যেই চিত্রকল্প চিরকাল লেপ্টে রয়েছে হৃদয়ে, মনমন্দিরে। আসবেই তো, বিবর্ণ, বিষণ্ন মনে যে ঋতু নতুন রঙ লাগিয়ে রাঙিয়ে দেয় প্রকৃতিকে, সে তো ঋতুরাজই! ঋৃতুরাজের ছোঁয়ায় একটি ঋতুর শুভ সূচনায় যদি সকালের ভালোবাসা পায় প্রকৃতি, নিশ্চয় মানুষের জন্য স্থায়ী হবে ধরিত্রী। এই ভালোবাসাটাই দরকার।
তবে যেটা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না, তা হলো আমাদের ভূখণ্ডে বসন্তকালের অবস্থান বা যৌবনটা খুই স্বল্প সময়ের। খানেকটা ঠেকায় ক্ষণস্থায়ী। আসতে না আসতেই যেন ফিরে যায় বা উপলব্ধিতে মনে হয়, এসেই যেন ফুরিয়ে গেলো। কেননা, ফাগুনের পরই আসে চৈত্রের দহনবেলা। খরতাপ। এরপরও বসন্ত যতোটুকু ছাপ ফেলে, মায়াময়ী প্রকৃতিকে আরো কাছে টানতে শেখায়। আজ এই বসন্তের শুভলগ্নে, শুভযোগ ঘটুক সকলের হৃদয়ে। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক ভালোবাসা।