হাসপাতালের বদলে বাবুলকে নেওয়া হয় থানায় : ওসি ক্লোজড
স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীতে চা-বিক্রেতা বাবুল মাতুব্বর নিহতের ঘটনায় শাহআলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শাহীন মণ্ডলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল তাকে ডিএমপির কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মারুফ হোসেন সরদার জানিয়েছেন, প্রশাসনিক স্বার্থে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে গত বৃহস্পতিবার একই অভিযোগে শাহ আলী থানার এসআই মমিনুর রহমান খান, এসআই একেএম নিয়াজউদ্দিন মোল্লা, এসআই শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদার, এএসআই দেবেন্দ্রনাথ সরকার ও কনস্টেবল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তকৃত ৫ জনকে শাহ আলী থানা থেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
চা বিক্রেতা বাবুল মাতুব্বরের পরিবারের অভিযোগ, গত বুধবার রাতে গুদারাঘাট এলাকায় চাঁদা না পেয়ে পুলিশ বাবুলের দোকানের কেরোসিনের চুলায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেছিলো। এতে কেরোসিন ছিটকে বাবুলের গায়ে আগুন ধরে যায়। দগ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান। বাবুল দগ্ধ হওয়ার দিনগত রাত দেড়টার দিকে অনেকটা তড়িঘড়ি করে মেয়ে রোকসানা আক্তারকে দিয়ে শাহ আলী থানার ওসি একেএম শাহিন মণ্ডল একটি মামলা করান। মামলায় কোনো পুলিশ সদস্যকে আসামি না করে স্থানীয় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়। ওই মামলার আসামিদের মধ্যে পারুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে বুধবার রাতে দগ্ধ হওয়ার পর পুলিশ বাবুলকে হাসপাতালের বদলে থানায় নিয়েছিলো বলে গতকালও অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। থানা থেকে পরে পরিবারের সদস্যরাই দগ্ধ বাবুলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ বলছে, পুলিশ নয়, সোর্স দেখে পালাতে গিয়ে বাবুল দগ্ধ হন। আর বাবুল নিজেও মাদক বিক্রেতা ছিলেন। তবে ঘটনার পর মামলা নিয়েও পুলিশ রহস্যজনক ভূমিকা পালন করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলী থানার এসআই মুক্তারুজ্জামান বলেন, পারুলকে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত দু দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার অন্য পাঁচ আসামিকে গ্রেফতারে একাধিক স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। এদিকে, নিহত বাবুলের পরিবারে এখনো মাতম চলছে। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি। তাদের দাবি, ঘটনায় জড়িত মূলহোতারা যেন গ্রেফতার হয়। তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তারা।