খুনের পেছনের কারণ ও জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আবু বকর ও হকপাড়ার আব্দুল হান্নানের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়। তবে পৃথক এ দুটি ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ফার্মপাড়ার মৃত শামসুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিককে মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে জবাই করা অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। কিছুক্ষণ পর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহতের সন্তানদের দাবি, বয়সজনিত কারণে বাবা আবু বকর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে ধারালো বটি দিয়ে গলা কেটে আত্মহত্যা করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পেটের পীড়াজনিত রোগে ভুগছিলেন বলে দাবি পরিবারটির। তাদের ধারণা নিজের গলা নিজেই কেটে আত্মহত্যা করেছেন।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা শহরের হকপাড়ার মৃত আকছেদ আলীর ছেলে ভাঙড়িব্যবসায়ী আব্দুল হান্নানকে গত সোমবার রাতে দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আরামপাড়া বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের আবাসিক এলাকায় পিটিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে মঙ্গলবার তাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে কুষ্টিয়ার মিরপুরে তিনি মারা যান। নিহত ব্যক্তির মামা হাসান আলীর দাবি, এলাকায় মাদকব্যবসার সাথে জড়িত একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে হান্নানকে হত্যা করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়ালিউর রহমান জানান, আবু বকর সিদ্দিকের গলাকাটার ধরন ও গভীর ক্ষত দেখে বোঝা যাচ্ছে, কারও পক্ষে নিজের গলা এভাবে কাটা সম্ভব নয়। মেডিকেল বোর্ড গঠনের পর প্রকৃত বিষয় জানা যাবে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। খুনের পেছনের কারণ ও জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।
নিহত আবু বকরের স্ত্রী হালিমা খাতুন বলেন, মঙ্গলবার রাতে পাশের কক্ষে স্বামীর গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর ছেলে ও পুত্রবধূকে ডাকেন। মুমূর্ষু অবস্থায় তারা আবু বকরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। আবু বকর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে ২০০০ সালে অবসর গ্রহণ করেন। এর পর থেকে তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। আবু বকর ও হান্নানের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।