বিদ্যালয়ে বাণিজ্য বিভাগই নেই, অথচ বাণিজ্য বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত। আর ইংরেজি শিক্ষক? মৃত্যুজনিত কারণে পদটি শূন্য হলেও নিয়োগ দেয়া হয়নি। কেন? অভিযোগ, ইংরেজি শিক্ষকের পরিবর্তে ব্যবসায় শিক্ষা শূন্যপদ দেখিয়ে শিক্ষক নিয়োগের আড়ালে রয়েছে অর্থ বাণিজ্য। অবশ্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তা অস্বীকার করলেও ইংরেজি শিক্ষকের বদলে ব্যবসায় শিক্ষক নিয়োগে তেমন যুক্তি দেখাননি। বলেছেন, যা হয়েছে তা অনুমোদন নিয়েই হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তির যাঁতাকলে চিড়ে চ্যাপটা হওয়ার পথে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা। বেশ কয়েকদিন ধরে শিক্ষাদান ব্যাহত হচ্ছে মূলত শিক্ষক ও অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে। বিদ্যালয়টিতে ইংরেজি শিক্ষক যখন জরুরি ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া দরকার, তখন তা না দিয়ে কেন ব্যবসায় শিক্ষা শিক্ষক নিয়োগে মাতামাতি? এ প্রশ্নই বিদ্যালয়ের হালচিত্র কেমন তা বোদ্ধাদের নিকট নিশ্চয় স্পষ্ট। তবে আনুমান বা দূরে বসে উপলব্ধির চেয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে অবশ্যই দরকার তদন্ত। সুষ্ঠু প্রভাবমুক্ত তদন্তে নিশ্চয় বেরিয়ে আসবে প্রধান শিক্ষকের দম্ভোক্তি, কী দোষ আড়ালের চেষ্টা? নাকি সত্যিই কোনো অনিয়মই হয়নি? তাছাড়া ইংরেজি শিক্ষকের পদটি শূন্য রেখে শিক্ষা অফিসারই বা কিসের ভিত্তিতে ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন দিলেন? তবে কি দুর্নীতির শেঁকড় অনেক গভীরে? যদি তেমনটাই হয় তবে তা দ্রুত উৎপাটনে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। তার আগে যতো দ্রুত সম্ভব, বিদ্যালয়ের পাঠন-পঠনের পরিবেশ ফেরানো।
নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের পদদ্ধিগত ত্রুটির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপন হয়ে আসছে। তদন্তে অনিয়ম ধরাও যে পড়ে না তাও নয়। শক্ত হাতে অনিয়ম দুর্নীতি রুখতে না পারলে তা সংক্রমিত হয়। হচ্ছেও। ফলে ঘোলদাড়ী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগের সুষ্ঠু স্বচ্ছ তদন্তপূর্বক উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। মনে রাখা দরকার, কোনো কারণে দোষী পার পাওয়ার খেসারত সমাজকেই দিতে হয়।