প্রশ্নটি যতোটা না ঈর্ষার, তার চেয়ে অধিক নিজেকে গড়ার

‘একশ বারো বছর আবার বয়স হলো নাকি? আমাদের আকন্দবাড়িয়ায়ই তো ১২০ বছরের বৃদ্ধ দিব্যি হাঁটছেন। ওদিকে মাজহাদের ময়মান নেছারও তো বয়স ১১৫ পেরিয়ে গেছে সেই কবে! তা হলে বিশ্বের সর্বাধিক বয়স্ক ব্যক্তি জাপানের ওই ব্যক্তি হলেন কীভাবে?’
গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকার বিশ্ব পরিক্রমা কলামে বিশ্বের বয়ষ্ক ব্যক্তি জাপানের ইয়াসুতারো কোইদ ১১২ বছর বয়সে মারা যাওয়ার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এলাকার অনেকেই এ ধরনের প্রশ্ন তোলেন। কৌতূহলী প্রশ্নের সঙ্গত জবাবের জন্য গতকালই কয়েকটি স্থানে খোঁজ নিতে গেলে প্রবীণদের অনেকে তরুণদের উত্থাপিত ওই প্রশ্নকে সমর্থন করে বলেছেন, ‘আমার বয়স এখন ৮৫ বছর, আমি সেই ছোট বেলা থেকেই দেখছি চাচা বৃদ্ধ। এখনও বেঁচে আছেন, বয়স না হলেও তো ১২০ হবেই। তা হলে জাপানের ইয়াসুতারো কোইদ ১১২ বছরে বিশ্বের প্রবীণ হবে কেন?’
বিশ্বের বয়ষ্ক ব্যক্তির মৃত্যু এবং তার স্বীকৃতিতে সমাজের খুব বেশি লাভ লোকসান না হলেও ভেতরের পাতায় ছোট্ট পরিসরে প্রকাশিত সংবাদটির প্রেক্ষিতে আমাদের সমাজে উত্থাপিত কৌতূহলী প্রশ্নটি অবশ্যই প্রাসঙ্গিক। কেননা, অন্যদেরটা অন্যরা স্বীকৃতি আদায় করলে আমরা কেন করবো না? এই বোধ অবশ্যই সমাজের অগ্রযাত্রা তথা সচেতনতার ইঙ্গিত বহন করে। সভ্যতা এবং বিশ্বমানের সভ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে, আছে বিতর্ক। সমাজের অগ্রযাত্রা এবং সচেতনতার আলো ছড়ানোর গতি নিয়েও ঘরে-বাইরে তর্ক বিদ্যমান। তবে স্বীকৃতি আদায়ের মতো উচ্চতায় ওঠায় আমাদের যে ঘাটতি তা বলাই বাহুল্য।
‘অন্যে পারে আমি কেন পারি না?’ প্রশ্নটি যতোটা না ঈর্ষার, তার চেয়ে অধিক নিজেকে গড়ার। যদি পরিশ্রমে ভিতুর বদলে আত্মবিশ্বাসে লক্ষ্যে পৌছুনোর সদিচ্ছা থাকে। শুধু প্রবীণ নয়, অবশ্যই সমাজের যতো কীর্তি তার সবই বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার মতো পর্যায়ে পৌঁছুতে হবে আমাদের।