কামরুজ্জামান বেল্টু: অপ্রাপ্ত বয়সেই প্রেম করে বিয়ে করেছিলো চুয়াডাঙ্গা গাইদঘাট দক্ষিণপাড়ার তুলকা আক্তার তুলি। তখন পড়তো ৮ম শ্রেণিতে। বিয়ের আড়াই বছর কেটেছে। দাম্পত্য নিয়ে দূর হয়নি দুশ্চিন্তা। এরই মাঝে জীবনটাই তুলির বিপন্নের পথে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্বামী একইপাড়ার রুবেল মাঝে মাঝে রাতে তুলিকার সাথে থাকলেও পিতার বাড়িতেও নেয় না, ভালো করে সংসারও করে না। সন্তান এলেই ওষুধ প্রয়োগে নষ্ট করে। সর্বশেষ ৬/৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তুলিকার গর্ভপাত ঘটে। মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তাকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। এরপরই প্রতিবেশীরা তুলিকার কষ্টের কাহিনী সাংবাদিকদের সামনে তুলে তুলে ধরেন। তারা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, মা হারা তুলির দূরদিন বোধ হয় আর যাবে না।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাইদঘাট দক্ষিণপাড়ার তোতা মিয়ার মেয়ে তুলিকা আক্তার তুলির সাথে প্রেমসম্পর্ক গড়ে তোলে একই গ্রামের আফছার আলীর ছেলে রুবেল। আড়াই বছর আগে এরা নিজেদের পছন্দে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে তুলি তার পিতার বাড়িতেই থাকে। রাতে রুবেল আসে। থাকে। যখনই তুলি সন্তান সম্ভবা হয়, তখনই রুবেল নানা অজুহাতে সন্তান নষ্ট করতে মেতে ওঠে। প্রতিবেশীরা বলেছেন, তুলির এবার ৬/৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গতকাল বুধবার সকালে দুটি ট্যাবেলট দেয় তুলকে। তুলি তা খেলে বিকেলে প্রসব বেদনা শুরু হয়। রাত ৮টার দিকে মৃত কন্যা সন্তান হয়। অনাবরত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রাতেই তুলিকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। কর্তব্যরতর চিকিৎসক ডা. এহসানুল হক মাসুম বলেছেন, প্রসূতির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। জরুরি ভিত্তিতে কয়েক ব্যাগ রক্ত দিতে হবে।
তুলিকে তার স্বামীর বাড়ি না নিয়ে দফায় দফায় গর্ভের সন্তান মেরে ফেলার অভিযোগ নিয়ে গতকাল কয়েকজন প্রতিবেশী চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হাজির হন। তবে নালিশ শেষ পর্যন্ত তেমন কর্ণপাতই করেননি থানায় উপস্থিত কর্তা বাবুরা। এরকমই অভিযোগ করে প্রতিবেশীরা বলেছেন, তুলির বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার। হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে যখন এসব নিয়ে আলোচনা তখনই হাসপাতাল পৌঁছান রুবেলের পিতার আফছার আলী। তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিন সাফ জানিয়ে দেন, নিজেদের পছন্দে নিজেদের মতো করে ওরা বিয়ে করেছে বলে আমি মেনে নিইনি।