ভেজালের রামরাজত্বে সকলেই খুঁজি আসল

দেশের প্রতিটি হাট-বাজারে ফরমালিন ও ভেজাল শনাক্তকরণ যন্ত্র ভোক্তাদের হাতের নাগালে পর্যাপ্ত রাখা দরকার। যেমন পশুহাটগুলোতে রাখা হয়েছে জালটাকা শনাক্তকরণ যন্ত্র। কোন মাছে কতোটা ফরমালিন, কোন শাক সবজিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের উপস্থিতি, কোন খাদ্যদ্রব্য কতোটা ভেজাল তা সহজে শনাক্ত করতে না পারার কারণে অসাধু কারবারীদেরই যেন রামরাজত্ব। বাজারে এমন একজন ভোক্তাও পাওয়া যাবে না যে, তিনি জেনেশুনে ক্ষতিকর ভেজাল দ্রব্য কিনবেন। যে ব্যক্তি ভেজাল করেন, অসাধু, তিনিও নিজের বেলায় ভালোটাই খোঁজেন।
বাজারে ফলফলারি নিশ্চিন্তে কেনার জো নেই, খেজুরের গুড়? তাতেও নেই আসল স্বাদ। মাছ? মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কিছুটা স্বস্তি মিললেও অভিযান ঝিমিয়ে গেলে পূর্বাবস্থায় ফেরে। গুড়ো মশলা? কোনটার সাথে কোন ধরনের অখাদ্য কু-খাদ্য যে মেশানো হয়, তা বোঝা ভার। গুড়ো ঝালের সাথে পোড়ামাটি মেশানোর উদাহরণ এই জনপদে রয়েছে। মজমা করে দাঁতের ভালো মাজন বলে ঘুটোর ছাই বিক্রিরও নজির রয়েছে এই সমাজে। সরষের তেল? ঝাঁঝটা বেশি হলেও আসলটা বাজারে নেই বললেই চলে। ভাবছেন, এক দু মুঠো মুড়ি খাবেন? গিন্নিরটা বাদে বাজার থেকে কিনলে তাতে ইউরিয়ার উপস্থিতি স্পষ্ট। এই যখন পরিস্থিতি, তখন প্রতিকারের উপায়?
বিজ্ঞানের যুগে বৈজ্ঞানিক উপায়েই ভেজালমুক্ত সওদা চাই আমরা সবাই। ভেজালমুক্ত গুড় কিংবা সারছাড়া মুড়ি পেতে অবশ্যই দরকার, ভেজাল ও রাসায়নিক অবাঞ্ছিত পদার্থ শনাক্তকরণ যন্ত্র। কোন শাকে বিষ, কোন মাছে পচনরোধক রাসায়নিক পদার্থ তা শনাক্ত করতে পারলে ভোক্তারাই শুধু উপকৃত হবেন না, উৎপাদক ও বিক্রেতাদেরও বাড়বে কদর। যেহেতু সকলেই সুস্থ থাকার স্বপ্ন দেখে, সেহেতু সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবেন যে নেতা, তিনিই হবেন ইতিহাস। ভেজাল, রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণমুক্ত পরিবেশ পেতে কতোদিন অপেক্ষা করতে হবে কে জানে?