ঘটনাস্থল থেকে ফিরে মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার হিন্দা সেতুর গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ব্রিজের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। গাংনী-তেঁতুলবাড়িয়া এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সেতুতে ফাটল দেখা দেয়ায় এখন ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা যায়, জেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর সাথে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে প্রায় ১৫ বছর আগে হিন্দা-তেঁতুলবাড়িয়া মাঠের সড়কের ওপর এলজিইডি সেতুটি নির্মাণ করে। গত বছর সড়কটি পাকা করা হয়। ফলে উপজেলার সাথে ওই এলাকার মানুষের যোগাযোগ আরো বৃদ্ধি পায়। সেতু নির্মাণ ও পাকা হওয়ায় চাষিদের উৎপাদিত ফসল উত্তোলন এবং বাজারজাত করাও সহজ হয়। তাছাড়া প্রতিদিন সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে পণ্য আনা-নেয়ার কাজে ট্রাকসহ ছোট যানবাহনও এখন চলাচল করছে। গাংনী পূর্ব মালসাদহ থেকে তেঁতুলবাড়ীয়া সীমান্তের এ অঞ্চলে কর্মরত প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের সদস্যরা এ সেতু দিয়ে চলাচল করে।
সরেজমিন দেখা যায়, ওই সেতুর নিচ ও দুই পাশে বালি সরিয়ে ফেলায় ব্রিজের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। ফলে যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। তারা আরো জানায়, দুই সপ্তাহ আগে পলাশীপাড়ার মৃত আব্দুলের ছেলে আব্দুল হামিদ সেতুর দু পাশে পুকুর খুঁড়ে মাছ ধরতে যাওয়ায় এ বিপত্তি ঘটে। ব্রিজের দু পাশে আব্দুল হামিদের জমি রয়েছে। সেখানে তিনি পুকুর খনন করেছেন। দু পাশের পুকুর একত্র করতে তিনি ব্রিজের নিচ দিয়ে খনন করছেন। ব্রিজের ক্ষতি সাধন হতে পারে এমন আশঙ্কায় এলাকার মানুষ তাকে খনন করতে নিষেধ করলেও তিনি তা শোনেননি। নিজের জমি তাই যা ইচ্ছে তাই করতে পারি এমন দাম্ভিকতা দেখিয়ে তিনি গায়ের জোরে পুকুর খনন করেছেন বলে জানান এলাকার সচেতনমহল।
স্থানীয়রা জানান, এ সেতুর ওপর দিয়ে সীমান্তবর্তী তেঁতুলবাড়িয়া, রামদেবপুর, খাসমহল, রংমহল, মথুরাপুর, সহড়াতলা, করমদিসহ প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ নিয়মিত চলাচল করে। সেতুর দু পাশে রয়েছে হিন্দা-তেঁতুলবাড়িয়া মাঠ। সারা বছরই ফসল আবাদ হয়। ফলে উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলা ও বাজারজাত করার জন্য এ সেতু ও সড়কটি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তারা। তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ময়েজ উদ্দীন ও আনারুল ইসলাম জানান, সেতু ও সড়ক ঘেঁষে পুকুর খননের করণে মাটি সরে ধস দেখা দিয়েছে। আবার যানবাহন চলাচলের চাপ থাকায় সেতুর নিচে ও কার্নিসের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। এখন ফাটল প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে দ্রুত সংস্কার করা না হলে তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তারা।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন জানান, সড়ক ও সেতুর পাশে পুকুর খনন কিংবা মাটি অপসারণ দণ্ডনীয় অপরাধ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এলজিইডি গাংনী উপজেলা কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল বাছেদ জানান, ব্রিজের নিচে মাটি সরে গেলে ব্রিজের ক্ষতি হতে পারে। দ্রুত মাটি ভরাট করতে পুকুর মালিককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত এ সেতু সংস্কার ও ব্রিজের ক্ষতিসাধনকারী পুকুর মালিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।