চুয়াপাঙ্গার ৩ শিক্ষার্থীর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন

স্টাফ রিপোর্টার/আলমডাঙ্গা ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গা নূরনগর জাফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া ভাবসঙ্গীতে খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক সংগঠন আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্র গৌরবের ধারা অব্যাহত রেখেছে। জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় ২০১৬ অংশ নিয়ে খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের দুই শিক্ষার্থী শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। এ মাসের শেষ দিকে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় দেশসেরার খেতাব ছিনিয়ে আনতে তারা নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের জাফরপুরের সুমন আলী ও শিল্পী খাতুনের মেয়ে সুরাইয়া খাতুন এবারের জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে ভাবসঙ্গীতে প্রথম স্থান অধিকার করে। এবার সে ঢাকায় প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। সুরাইয়া নূরনগর জাফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে ভাবসঙ্গীতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে বিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলী তাকে অভিনন্দিত করেছে।
জানা গেছে, গত ৩ জানুয়ারি জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় খ বিভাগে পল্লী গীতিতে অংশ নিয়ে আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের শিক্ষার্থী ব্রাইট মডেল স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী তমা বিশ্বাস ও ভাবসঙ্গীতে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী ঝরনা খাতুন ১ম স্থান অর্জন করেছে। ৭ জানুয়ারি জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও এ দুজন ১ম স্থান অর্জন করে। গত ১৬ জানুয়ারি খুলনা বিভাগীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় যশোরে। যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তমা বিশ্বাস ১ম স্থান ও ঝরনা খাতুন ২য় স্থান অর্জন করেছে। এ মাসের শেষে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়ে দেশসেরার খেতাব ছিনিয়ে নিতে তারা বর্তমানে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছে। তমা বিশ্বাস আলমডাঙ্গা শহরের কাছারি বাজারের জগবন্ধু বিশ্বাসের মেয়ে ও ঝরনা খাতুন আলমডাঙ্গার প্রত্যন্ত গ্রাম খাসকররার মনোয়ার হোসেনের মেয়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে খুলনা বিভাগে শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে ঝরনা। ইতঃপূর্বে বিটিভির রজত জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় কলাকেন্দ্রের শিক্ষার্থী রজনী খাতুন সারাদেশে লালন গীতিতে ২য় ও নজরুল সঙ্গীতে ৩য় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। আন্তঃপ্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিযোগিতায়ও সে সারাদেশে দেশগানে ৩য় স্থান অর্জন করে। কলাকেন্দ্রের শিক্ষার্থী পিংকী সম্প্রতি বিটিভির নিয়মিত তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছে। ২০০৭ সালে বৈশাখী টেলিভিশন আয়োজিত পদ্মকুঁড়ি প্রতিযোগিতায় সারাদেশে প্রথম হয়েছিলো এ কলাকেন্দ্রের সাবেক শিক্ষার্থী কৃপা। কৃপা বর্তমানে স্কলারশিপ নিয়ে জাপানে নাচের ওপর ধ্রুপদী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
জেলার অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক সংগঠন আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের সভাপতি ইকবাল হোসেন এবং সম্পাদক হিসেবে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন রেবা সাহা। সঙ্গীত ও নৃত্যের প্রশিক্ষক হিসেবে এসএম সেলিম ও তবলাসহ বাদ্যযন্ত্রের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন সুশীল কর্মকার। ১৯৯০ সাল থেকে আজোবধি অবৈতনিকভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গীত নৃত্যের প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে তারা। এ সংগঠনটি এখন খুলনা বিভাগের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।