গাংনীতে পাওয়ার ট্রলি চাপায় এক শিশু নিহত
গাংনী প্রতিনিধি: বাঁশ বোঝাই পাওয়ার ট্রিলার ট্রলিতে মনের আনন্দে ঝুলছিলো সাড়ে তিন বছর বয়সী খালিদ হাসান। পরম সুখে আত্মহারা শিশুটি ঝুলতে ঝুলতে উল্লাস করছিলো। ট্রলির পেছনের চাকা ও সামনের অংশের মাঝামাঝি ঝুলতে ঝুলতে কিছু দূর যেতেই ঘটে বিপত্তি। ট্রলির পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই চিরতরের জন্য নিভে যায় ফুটফুটে খালিদের জীবন প্রদীপ। আর পরিবারের নেমে আসে শিশুকে একা একা বাইরে যেতে দেয়ার সামান্য সেই ভুল শুধরাতে না পারার আজীবন আফসোস। তাইতো পিতামাতা যে পাগল প্রায় আর গোটা গ্রাম জুড়েই শোকের ছায়া। সদা চঞ্চল ও মিষ্টি মুখে পাড়া দাপিয়ে বেড়ানো শিশুটির এমন পরিণতি যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
গতকাল রোববার বিকেলে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গোপালনগর গ্রামের সড়কে ওই নির্মম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় খালিদ হাসান নামের এক শিশু। নিহত খালিদ হাসান গোপালনগর গ্রামের এক সময়ের কুয়েত প্রবাসী পাতেবুজ্জামান ভোলার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালনগর গ্রামের আব্দুল কাদের তার ট্রলিতে বাঁশ বোঝাই করে গ্রামের ভেতরের সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় খালিদসহ তার সমবয়সী কয়েক শিশু ট্রলির পেছনে ঝুলে খেলতে থাকে। এক পর্যায়ে খালিদ ছিটকে পড়ে ট্রলির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। রাতে গ্রামের মসজিদের কাছে পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে খালিদের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
মৃত্যুর খবর পেয়ে পিতামাতা যেমনি পাগল প্রায় তেমনি গোটা গ্রামের মানুষ শোকে মুহ্যমান। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গ্রামের সড়ক দিয়ে যানবাহন গেলে অনেক শিশু খেলার ছলে পিছু পিছু দৌড়ে যায়। খালিদ হাসানও সেভাবে ট্রলির পিছু নেয়। কিন্তু চালক জানতো না যে শিশুরা পিছু নিয়েছে। পাতেবুজ্জামান ভোল কুয়েত থেকে ফিরে কাঠেরব্যবসা করেন। তিনি দু ছেলের জনক। বড় ছেলে ফয়সল ফারুক গাংনী সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। পিতামাতার বড় আদুরে ছেলে খালিদ। তাই খালিদের লাশের পাশে বুক আছড়ে কেঁদে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন তার মা নুরুন্নাহার খাতুন। পিতামাতার আহাজারি দেখে উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। গাংনী থানা সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার জন্য ট্রলিচালক দায়ী নয়। তাই নিহতের পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়নি।