দামুড়হুদায় আটক টুপি শহিদুলকে থানায় মারধরের অভিযোগ : জেলহাজতে প্রেরণ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে যুবলীগ কর্মী শরীফুল, শাহিন, আজিবার ও হাসানকে মঙ্গলবার বিকেলে এবং দামুড়হুদা থানা পুলিশ ওই রাতেই দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ ৫ যুবলীগ কর্মীকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ডিবি পুলিশের হাতে আটক ৪ যুবলীগ কর্মীর নামে ওয়ারেন্ট থাকায় এবং থানা পুলিশের হাতে আটককৃতরা হত্যা ও মারামারির পৃথক তিনটি মামলার পলাতক আসামি হিসেবে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
ডিবি পুলিশের হাতে আটক ৪ যুবলীগ কর্মী হলেন- দামুড়হুদা দশমীপাড়ার তৈয়ব আলীর ছেলে শরীফুল ইসলাম (৩০), বসতিপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে আজিবার (২৮), রহমান (২৮), দেউলীর ইব্রাহিমের ছেলে বড় শাহিন (৩২), ও বেগোপাড়ার হানেফ বিশ্বাসের ছেলে হাসান (৩২)।
অপরদিকে, দামুড়হুদা থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃতরা হলেন, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দশমীপাড়ার মৃত আশুর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৮), দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগ নেতা খাঁপাড়ার মৃত আনছার আলীর ছেলে অ্যাড. আবু তালেব (৪৭), আবু তালেবের ছোট ভাই ইউপি সদস্য যুবলীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম (২৮), একই পাড়ার মৃত সোনাই মল্লিকের ৩ ছেলে যুবলীগ কর্মী সাবেক ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী ওরফে ইছা মেম্বার (৪৪), শহিদুল ইসলাম (৪৯) এবং শফিকুল ইসলাম শফি (৪২)।
পুলিশ জানায়, ২০১০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দামুড়হুদা খাঁপাড়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গোলাম রসুল ওরফে কিঙ্কর (৪৮) এবং যুবলীগ নেতা আবু তালেবের বড় ভাই মোতালেবকে (৫০) রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার রাতেই গোলাম রসুল এবং একদিন পর মোতালেব চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত গোলাম রসুলের পক্ষে ইউসুফ আলী ওরফে ইছা মেম্বার এবং নিহত মোতালেবের পক্ষে মোতালেবের ভাই মুক্তাদির বাদী হয়ে উভয় পক্ষের ১৯ জন করে মোট ৩৮ জনকে আসামি করে পাল্টাপাল্টি হত্যা মামলা করেন। ওই হত্যা মামলার একপক্ষের শহিদুল ইসলাম, আবু তালেব ও জাহিদুল ইসলাম এবং অপর পক্ষের ইছা মেম্বার, শফিকুল ও শহিদুলের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এমনকি তাদের মামলামাল ক্রোকেরও নির্দেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। আটক টুপি শহিদুলকে দামুড়হুদা থানা হাজতে মারধর করা করা হয়েছে বলেও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেছে।
এদিকে ডিবি পুলিশের হাতে যে ৪ যুবলীগ কর্মী আটক হয়েছে এর মধ্যে শরিফুল, আজিবার ও শাহিন মঙ্গলবার বিকেলে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থানরত ডিবি পুলিশের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে তাদেরকে আটক করা হয়। আটক ওই ৩ জনের নামেই দামুড়হুদা থানায় ওয়ারেন্ট আছে। এছাড়া হাসানকে অন্য মামলায় আটক করা হয়েছে। ডিবি পুলিশ মূলত হাসানকে গ্রেফতার করতেই দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান করছিলো বলে জানা গেছে। দামুড়হুদা উপজেলা সদর থেকে একই দিনে এক পক্ষের ৩ জন এবং অপর পক্ষের ৬ জনকে গ্রেফতার করায় সাধারণ জনগণের মধ্যে নানা কৌতূহল সৃষ্টি হয়। দু গ্রুপের মধ্যে চেক এ ব্যালেন্স করার জন্যই পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করেছে বলে এলাকাবাসী মন্তব্য করেছে।