ভূমিকম্পের সময় যা করা দরকার : যা কারা ঠিক নয়

স্টাফ রিপোর্টার: নতুন বছরের শুরুতেই বড় ধরনের ঝাকুনি দিয়ে গেলো ভূমিকম্প। উৎপত্তিস্থল ভারতের মনিপুরে হলেও এর প্রভাব ছিলো বাংলাদেশেও। গতকাল সোমবার ভোরের ৬ দশমিক ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্পনটিকে এযাবৎকালের সবচেয়ে ভয়াবহ কম্পন হিসেবেই দেখছেন ঢাকার বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশে এ ভূমিকম্পে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি না হলেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে ব্যাপক। আচমকা আতঙ্কে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন ছয়জন। হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। প্রকৃতপক্ষে ভূমিকম্পের সময় আমাদের করণীয় কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু ভূমিকম্পের কোনো পূর্বাভাস দেয়ার যন্ত্র নেই, তাই নিজেদের সতর্কতা ও সচেতনতাই হচ্ছে একমাত্র ভরসা।
ভূমিকম্পে যা করবেন, যা করবেন না: মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে ভূমিকম্পের সময় কোনোভাবেই উত্তেজিত হওয়া যাবে না। ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করতে হবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ছোটাছুটি করলে বরং ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
খোলা জায়গায় স্থান নেয়া: ভূমিকম্প শুরু হলে অযথা আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে, সম্ভব হলে দ্রুত খোলা জায়গায় বা ফাকা মাঠে স্থান নিতে হবে। তবে আশপাশে উঁচু ভবন থাকলে ফাঁকা জায়গায় গিয়ে তেমন সুফল হবে না। কারণ উঁচু ভবন ভেঙে ওপরে পড়ার সম্ভবনা থাকে।
বীমের পাশে বা দরজার নিচে দাড়ানো: বিল্ডিং হলে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সাথে সাথেই বীমের পাশে বা দরজার নিচে অবস্থান নেবেন। এতে বিল্ডিং ভেঙে পড়লেও ফাঁকা জায়গায় নিজেকে লুকানোর সুযোগ থাকে।
সিঁড়ির নিচে অবস্থান নেয়া: কোনো ভবনের সবচেয়ে মজবুত জায়গা হচ্ছে সিড়ি। তাই নিজেকে রক্ষা করতে সিড়ির নিচে অবস্থান নিতে পারেন।
টেবিলের নিচে আশ্রয় নেয়া: আধাপাকা বাড়ি হলে ঘরের মধ্যে টেবিলের নিচে বা শক্ত কোনো কিছুর আশ্রয় নিতে পারেন।
ফার্নিচার বা জানালার পাশে নয়: ভূমিকম্পের সময় অবশ্যই জানালার পাশে অবস্থান করা যাবে না। এতে জানালার কাঁচ ভেঙে আহত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এছাড়া কাঁচের কোনো ফার্নিচারের পাশেও দাড়ানো যাবে না।
গ্যাস ও বিদ্যুতের মেন সূইচ বন্ধ করা: কম্পন অনুভূত হওয়ার সাথে সাথেই সুযোগ পেলে বিদ্যুত লাইন বন্ধ করতে হবে। এর ফলে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে হয়তো রক্ষা পাওয়া যাবে।
লিফট ব্যবহার না করা: দ্রুত নিচে নামতে গিয়ে লিফট ব্যাবহার করা যাবে না। ভূমিকম্পের সময় লিফট হচ্ছে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা।
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি রোধে দীর্ঘমেয়াদী করণীয়: ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি তাৎক্ষণিক রোধ করা ছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী পরিক্ল্পনার মাধ্যমে কমানো যায়। উঁচু ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্প সহনশীল করে গড়তে হবে। যেন ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় হয়। ভবন নির্মাণের আগেই আশপাশে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা রাখতে হবে।