তিন শিশুকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার পর খুনির শাস্তি

হাতুড়ি পেটার পর ঘরে আটকে আগুন ধরিয়ে ৩ শিশুকে পুড়িয়ে অঙ্গার করার ঘটনা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। এ ঘটনার হোতাকে পশুর সাথে তুলনা করলেও বোধ করি পশুকে খাটো করা হয়। কেননা, পশুরাও তো অতোটা নৃশংস নয়। ৩ শিশুকে পিটিয়ে পুড়িয়ে হত্যার আশু তদন্তপূর্বক ঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য। অবশ্য ঘাতক অতোটা ভয়ঙ্কর হলো কেন, সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। সমস্যাটি পারিবারিক হলেও সংক্রামক থেকে সমাজকে রক্ষা করতেই দরকার আইনের যথাযথ প্রয়োগ।
হত্যা দূরাস্ত, যে সমাজে শিশুর শরীরে থাপ্পড় মারাকেই সুস্থতা বলে না, সেই সমাজে শিশু দু ভাতিজা ও এক ভাগ্নেকে হাতুড়ি পেটায় রক্তাক্ত জখমের পর আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে কী বলতে হবে? বিদেশের মাটিতে পরিশ্রম করে অর্জিত অর্থ দেশে পিতা ও ভাইয়ের নিকটা প্রেরণ করে, সেই টাকা ফেরত না পাওয়ার ক্ষোভ কি ৩ শিশুকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারার মতো ভয়ঙ্কর করে তুলতে পারে? ঘটনার ভয়াবহতা এতোটাই অমানসিক, তা বিশ্লেষণের চেয়ে খুনির শাস্তি কখন কতোটা শক্ত হচ্ছে সেটাই এখন অধিক আলোচ্য। ৩ শিশুকে পিটয়ে ও পুড়িয়ে মারা (অ) মানুষকে জনগণ ধরে পুলিশে দিয়েছে। পুলিশ বলেছে, হত্যার কথা স্বীকারও করেছে হত্যাকারী। এরপরও সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। কেননা, ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করা বা উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর হীনপ্রবণতা সমাজে এখনো বিরাজমান। মাঝে মাঝেই এই জনপদে তার নজির মেলে।
‘এতো কষ্টের পরও ভালো যখন থাকতে পারলামই না, তখন কাউকে ভালো থাকতে দেবো না’ এ ধরনের মানসিকতা লালন করে বিপথে পা বাড়ানোকে সুস্থতা বলা যায় না। তাই বলে ভয়ঙ্কর নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে নিজেকে অসুস্থ বলে চালানোর সুযোগ রাখাও সমাজের জন্য কল্যাণকর নয়। ফলে প্রতিটি ঘটনারই সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীকে আইনে সোপর্দ করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার। এর সুফল যেমন সমাজ ভোগ করে তেমনই নির্দোষ কেউ হয়রানির শিকার হলে তার কুপ্রভাব সমাজের ওপরই পড়ে।

Leave a comment