নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করতে চুয়াডাঙ্গা প্রশাসনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের ২৩৪টি পৌরসভার নির্বাচন আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গার ৪ পৌরসভায় ও মেহেরপুর গাংনী পৌরসভাও রয়েছে। নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশ মোতাবেক গতরাত থেকে সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ করা হয়েছে। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণাও ইতোমধ্যেই গতকাল থেকে বন্ধ করা হয়েছে। এদিকে নির্বাচনের নাশকতা ঠেকাতে চুয়াডাঙ্গার সদরসহ ৪ পৌরসভায় আরো ৪টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক নজদারীতে রেখেছে পৌর এলাকা সমূহ। গতকাল রাত ৯টা বাজতে না বাজতে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়ে। রাতের গভীরতা বাড়তে শুরু করার সাথে চুয়াডাঙ্গার নিয়ন্ত্রণ যেনো চলে যায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। রাতের রাস্তা অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়ে।
জানা গেছে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ইতোমধ্যেই নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচনের আগের দুই দিন নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরের দিন পর্যন্ত। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় দায়িত্ব পালন করবেন সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল ইসলাম। দর্শনা পৌরসভায় দায়িত্ব পালন করবেন চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ. হালিম, জীবননগর পৌরসভায় দায়িত্ব পালন করবেন বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম গাজী. আলমডাঙ্গা পৌরসভায় দায়িত্ব পালন করবেন বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আকরাম। মেহেরপুর গাংনী পৌরসভায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করবেন খুলনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ আহমেদ। গত পরশু রাত থেকে ইতোমধ্যেই চুয়াডাঙ্গাসহ ৪ পৌরসভায় ৫ প্লাটুন বিজিবি টহল শুরু করেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র চুয়াডাঙ্গাতে ২ প্লাটুন ও অন্য ৩টি পৌরসভায় ১ প্লাটুন করে ৩ প্লাটুন বিজিবি টহল দিচ্ছে। মেহেরপুর গাংনী পৌরসভায়ও ১ প্লাটুন বিজিবি টহল দিচ্ছে।
নির্বাচনের ব্যালট বক্সসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ইতোমধ্যেই রিটার্নিং অফিসাররা হাতে পেয়েছেন। কাল পৌঁছুবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় পৌরসভা নির্বাচনের জন্য প্রতি বুথে ১টি করে ব্যালট বাক্স এবং কেন্দ্র প্রতি অতিরিক্ত ১টি ব্যালট বাক্স দেয়া হয়েছে। মোট ৭২টি কেন্দ্রের ৪০৪ বুথে ৪৭৬টি ব্যলট বাক্সে ভোটগ্রহণ করা হবে সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। চুয়াডাঙ্গা সদরসহ ৪টি পৌরসভায় ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ৪৪৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬১ হাজার ২০৪ জন এ মহিলা ভোটার ৬৩ হাজার ২৪৫।
চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে ৪ জন প্রার্থী। এরা হলো বর্তমান মেয়র নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, মোবাইল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু ও হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী তুষার ইমরান। এই পৌরসভায় মোট ভোটার ৬০ হাজার ৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৯ হাজার ৩২৬ ও মহিলা ভোটার ৩০ হাজার ৭১১ জন। ৩১টি ভোটকেন্দ্রে ১৯১টি বুথে ২২২টি ব্যালট বাক্স ভোটগ্রহণ করা হবে।
আলমডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ৬ প্রার্থী। এরা হলো বর্তমান মেয়র ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মীর মহি উদ্দীন, নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হাসান কাদির গনু, মশাল প্রতীক নিয়ে জাসদের মনোনীত প্রার্থী এম সবেদ আলী, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মনোনীত প্রার্থী রোকসানা পারভীন। মোবাইল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদেকুর রহমান ও রেলইঞ্জিন প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আল মামুন পিন্স। এই পৌরসভায় মোট ভোটার ২৩ হাজার ৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ২৭৪ জন ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৮১২ জন। ১৫টি ভোট কেন্দ্রে ৭৮টি বুথে ৯৩টি ব্যালট বাক্স ভোটগ্রহণ করা হবে।
দর্শনা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ৩ প্রার্থী। এরা হলো বর্তমান মেয়র ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মহিদুল ইসলাম, নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মতিয়ার রহমান ও জগ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশকার আলী। এই পৌরসভায় মোট ভোটার ২৪হাজার ১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৯৫৯ ও মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৫৪ জন। ১৬টি ভোট কেন্দ্রে ৭৮ টি বুথে ৯৪টি ব্যালট বাক্স ভোটগ্রহণ করা হবে।
জীবননগর পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে ৪ প্রার্থী। এরা হলো বর্তমান মেয়র ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজি নোয়াব আলী, নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দীন, জগ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজেদুর রহমান ও খেজুর গাছ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। এই পৌরসভায় মোট ভোটার ১৭ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৬৪৫ জন ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৬৬৮ জন। ১০টি ভোট কেন্দ্রে ৫৭টি বুথে ৬৭ টি ব্যালট বাক্স ভোটগ্রহণ করা হবে।