মধ্যরাতে দুসন্তানের জননীকে অপহরণের পর গণধর্ষণ : ঘটনার রাতেই গ্রেফতার ২

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার কালিয়াবকরী গ্রামে ২ সন্তানের জননীকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে তুলে মাঠে নিয়ে ধর্ষণ করেছে একই গ্রামের কয়েক যুবক। গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে কালিয়াবকরী গ্রামের ডাঙ্গার মাঠে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার রাতেই অভিযুক্তদের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে দু সন্তানের জননীর ডাক্তারি পরীক্ষা।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার কালিয়াবকরী গ্রামের এক জনের স্ত্রী (৪৫) রাতে নিজ বাড়ির বারান্দায় ঘুমাচ্ছিলেন। ৫/৭ জন অস্ত্রধারী যুবক তার বাড়িতে ঢুকে গামছা দিয়ে মুখ ও হাত বেধে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায় ডাঙ্গার মাঠে। সেখানে গণি বিশ্বাসের লিচুবাগানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ধর্ষণের শিকার ওই জননী। তিনি বলেছেন, পালাক্রমে ধর্ষণের পর তাকে পাশের ভূট্টার ক্ষেতে ফেলে রেখে যায় ওই যুবকেরা। সে নিজ চেষ্টায় কোনো রকমে বাড়ি ফিরে এলাকাবাসীদের ঘটনার কথা জানালে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ঘটনার সাথে জড়িত একই গ্রামের জালাল হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৫) ও মৃত জেন্নাত শেখের ছেলে সাদ্দাম হোসেনকে (২৬) ধরে গণপিটুনি শেষে দামুড়হুদা থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ঘটনার রাতেই ধর্ষণের শিকার জননীর জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বাদী হয়ে জালাল হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৫), মৃত জেন্নাত শেখের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৬), নূর ইসলামের ছেলে জাফর আলী (২৭), কুদ্দুস বিশ্বাসের ছেলে দুলুসহ (২৭) অজ্ঞাত নামা ১জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশসূত্রে জানা গেছে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩)’র ৯ (৩) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এ দিকে গ্রেফতারকৃত রবিউল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। তারা ধর্ষণের কথা স্বীকারসহ কুদ্দুস বিশ্বাসের ছেলে দুলু ও হাসানের কাছে একটি পিস্তলসহ ২ রাউন্ড গুলি আছে বলে তথ্য দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবারই তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া কুদ্দুস বিশ্বাসের ছেলে দুলু ভারতে পালিয়ে গেছে বলে এলাকায় গুঞ্জন ওঠেছে। তবে তার সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মাস আগে এই জননীর বাড়িতে একই উদ্দেশে ওই যুবকরা গেলে প্রতিবেশির স্ত্রী বাঁধা দেন। বাধার মুখে তার হাতে রাম দা দিয়ে কোপ মারে ওই যুবকেরা। এতে প্রতিবেশীর স্ত্রীর বাম হাতের আঙ্গুল কেটে পড়ে যায়। ঘটনার মূল হোতা আবুল কালামের ছেলে আবুল বাশার (২৭) এখনও গ্রেফতার হয়নি। ঘটনার পরের দিন সে থানার ওসিকে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে নিজের নাম কাটিয়েছে বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দোড় ঝাপ শুরুসহ ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি নিস্পত্তি করার পায়তারা করছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।। মোবাইলফোনে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের সাথে আসামি পক্ষের লোকজনের টাকা দিয়ে বিষয়টি নিস্পত্তি করার কথপোকথোনের অডিও ক্লিপগুলো মাথাভাঙ্গাকে প্রমাণ স্বরূপ প্রদান করা হয়েছে।