বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। স্বাধীনতার পর গড় আয়ু ছিলো ৫০-এর কাছাকাছি। বর্তমানে এই গড় আয়ু ৭০ বছর ৭ মাস। এ অগ্রগতি বিশ্বের মাপকাঠিতেও বিস্ময়কর বটে। সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে গড় আয়ু ছিলো ৭০ বছর ৪ মাস। ২০১০ সালে ছিলো ৬৭ বছর ৭ মাস।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পুরুষের তুলনায় নারীদের গড় আয়ু কিছুটা হলেও বেশি। শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়ে যায। সচেতনতা আয়ু বৃদ্ধির অন্যতম সহায়ক। যদিও ভবিষ্যত বিশ্ব ধনী-গরিবের পার্থক্য করবে কার কতোটা বেশি জীবনধারণের মতো খরচ করার সুযোগ আছে তা বিবেচনা করে। কেমন? যেমন ধরুন, শরীরে এমন কিছু প্রয়োগ করা হবে তাতে বার্ধ্যক্যই যেন আসতে চাইবে না। এমন কিছু আবিষ্কার হবে যা অর্থের বিনিময়ে পাওয়ার পর আয়ুটা দূরের কথা তারণ্যও ধরে রাখা যাবে এখনকার পৌঢ়ত্বেও। ফলে আয়ের সাথে জীবনের যোগসূত্রটা ভবিষ্যত বিশ্বে আরো নিবিড় হতে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে উন্নয়নের সুদূরপ্রসারী কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। আমাদের? নেয়া হয়, তবে তা কোথায় কখন গিয়ে থমকে থাকে তা আগাম বলা কঠিন। যদিও কয়েক দশকে দেশে গড় আয়ু বেড়েছে আশাব্যঞ্জক হারেই। একসময় দেশে মহামারী হতো, অপুষ্টি-অনাহার ও নীরব দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর হার বেড়ে যেতো। দিন বদলের ধারায় চিকিৎসা ব্যবস্থা পেয়ে চলেছে অবিস্মরণীয় আবিষ্কার। এর মাঝে ৫০ থেকে ৭০ বছর গড় আয়ুতে কি সন্তুষ্টু থাকা যায়? পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেয়ার মতো বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে পারলে গড় আয়ু যে আরো অনেক বেড়ে যেতো তা বলাই বাহুল্য। আর দেশে শতভাগ সুচিকিৎসার সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে?
আয়ু ৫০ বছর থেকে ২০ বছর ৭ মাস বেড়ে ৭০ বছর ৭ মাস হয়েছে বলে তৃপ্তির ঢেকুর তোলার কারণ নেই। জাপানে গড় আয়ু আমাদের তুলনায় অনেকদিন আগে থেকেই অনেক বেশি। আয়ু বাড়ানোর প্রতিযোগিতার চেয়ে সর্বক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথে হেঁটেই তাদের যে গড় আয়ু বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য। সে পথে হাঁটাই শ্রেয়।