স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেছেন, আমার সাথে কোনো রিপোর্টারেরই কথা হয়নি। যুগান্তরের রিপোর্টার পরিচয়ে তো নয়ই। তা হলে তিনি আমার কান্না বা কান্নাজড়িত কণ্ঠ পেলেন কোথায়?
গত পরশু ও গতকাল ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগান্তরে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গতপরশু রোববার ‘এমপির নেতৃত্বে থানায় হামলা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের সিংহভাগ জুড়েই গত ৩ ডিসেম্বর রাতে ‘পুলিশ-ছাত্রলীগের বিরোধে গুলি ও থানায় হাজির হয়ে হুইপের প্রশ্ন- শান্ত চুয়াডাঙ্গায় গুলি কেন?’ ঘটনা নিয়ে কাসন্দিঘাটার মতো প্যাচাল পাড়তে গিয়ে সত্যের অপলাপ করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার অনেকেই এসব মন্তব্য করে প্রশ্ন তোলেন, সত্যিই কি সদর থানার ওসি সাংবাদিকদের সামনে কান্নাকাটি করে ওইসব কথা বলেছেন? এ প্রশ্নের জবাব জানতে গতরাতে সেলফোনে সদর থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার সাথে যুগান্তরের কোনো রিপোর্টারের কথাই হয়নি। কান্নাকাটি করবো কেন? পত্রিকায় আমার বরাত দিয়ে যা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়। কেননা, ওইরাতে হুইপ মহোদয় বা মেয়র মহোদয় থানায় এসে কোন প্রকারের অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করেননি। কেউ অশ্লীল কথা বা ব্যবহারও করেননি। ধাক্কাধাক্কির প্রশ্নই ওঠে না।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ বিবৃতিতে বলেছেন, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ২০ ডিসেম্বর ‘এমপির নেতৃত্বে থানায় হামলা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ আমাদের বিস্মিত করেছে। আমরা এই জাতীয় একতরফা সংবাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাংবাদটি নিতান্তই রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত এবং ব্যক্তিগতভাবে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সেদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাটি স্পষ্ট করতে পরেরদিন বিকেলে সকল স্থানীয় সাংবাদিকদের একত্রিত করে বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছিলো। যা পরের দিন বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। অথচ এতোদিন পর আকস্মিকভাবে এ জাতীয় বিকৃত সংবাদ পরিবেশন কতোটা সমিচীন তা সংবাদের প্রতিবেদন প্রস্তুতকারীই বলতে পারেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে হুইপ মহোদয় অত্যন্ত স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনা শোনামাত্র পুলিশ সুপারকে ১০/১২ বার টেলিফোন করা হয়। টেলিফোন করে না পাওয়ার কারণেই নিজের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় না নিয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে উপস্থিত হয়ে বড় ধরনের কোনো অঘটন বন্ধ করতেই ছুটে যেতে বাধ্য হই।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে বলা হয়েছে, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, রোববার মিথ্যা এবং আক্রমণাত্মক সংবাদের ধারাবাহিকতায় সোমবার একই পত্রিকায় দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত একজন রাজনৈতিক নেতার চরিত্র হননের অপচেষ্টা করা হয়েছে। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে যাদেরকে সন্তান স্নেহে গড়ে তুলেছেন তাদের হত্যাকাণ্ডের দায়ও হুইপ মহোদয়ের ঘাড়ে চাপিয়ে প্রমাণ করেছে কোনো একটি বিশেষ চক্র তাদের রাজনৈতিক ও গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিল করতে একজন মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরযোদ্ধা দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং চুয়াডাঙ্গার সর্বস্তরের গণমানুষের কাছে অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কাল্পনিক, ভিত্তিহীন এক গভীর চক্রান্ত করছে। ওই সকল হত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষক কারা ছিলো চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর তা অজানা নয়। যেহেতু পৌরসভার নির্বাচন অত্যাসন্ন এবং চুয়াডাঙ্গা সদর পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী মাননীয় হইপ মহোদয়ের সহোদর, স্বাভাবিক কারণেই হুইপ মহোদয়ের প্রতি সাধারণ ভোটারদের গভীর আস্থা এবং ভালোবাসাকে আঘাত করতেই এই জাতীয় বিদ্বেষপূর্ণ, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার সকল স্তরের জনগণ এবং ভোটারদের এ জাতীয় মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।