চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচনে আজাদ মালিতা-ফাইজার চৌধুরী প্যানেলের নিরঙ্কুশ জয়লাভ

নবনির্বাচিত কমিটিকে সর্বস্তর থেকে অভিনন্দন : সকলকে সাথে নিয়ে সার্বিক উন্নয়নে সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানালেন হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গোপন ব্যালটে ক্লাবের ৫০ জন সদস্যের সকলেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ২ বছরের জন্য নেতা নির্বাচিত করেন। নির্বাচনে আজাদ মালিতা-ফাইজার চৌধুরী প্যানেল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ১৩টি পদের অর্থ সম্পাদক পদটি বাদে বাকি সবগুলোতেই এসএম শরীফ উদ্দীন হাসু-রাজন রাশেদ প্যানেলের ভরাডুবি হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের নির্বাচনে সভাপতি পদে আজাদ মালিতা ২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী এসএম শরীফ উদ্দীন হাসু পেয়েছেন ২৩ ভোট। সহসভাপতি পদে ২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন রফিকুল ইসলাম। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নাসীর উদ্দীন আহমেদ পেয়েছেন ২২ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ফাইজার চৌধুরী ২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী রাজন রাশেদ পেয়েছেন ২৩ ভোট। একটি ভোট দুজনকেই ক্রস দেয়ায় বাতিল হয়েছে। যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পদে বিপুল আশরাফ ২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী রিচার্ড রহমান পেয়েছেন ২৪ ভোট। অর্থসম্পাদক পদে ২৬ ভোট পেয়ে জামান আখতার নির্বাচিত হয়েছেন। আব্দুস সালাম পেয়েছেন ২৪ ভোট। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আহাদ আলী মোল্লা ২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। পরাজিত প্রাথী জাহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ২৪ ভোট। দফতর সম্পাদক পদে খাইরুজ্জামান সেতু ২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী কামরুজ্জামান সেলিম পেয়েছেন ২৩ ভোট। ক্রীড়া সম্পাদক পদে ইসলাম রকিব ৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনিই পেয়েছেন সর্বাধিক ভোট। একই পদে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথী মাহফুজ মামুন সর্বনিম্ন ১৯ ভোট পেয়েছেন। কার্যকরি সদস্য ৫টি পদে দুটি প্যানেলভুক্ত ১০ জন প্রার্থী ছিলেন। এরমধ্যে রফিক রহমান ২৯ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রাজীব হাসান কচি ও শাহ আলম সনি ২৮টি করে ভোট পেয়ে সমানে সমান অবস্থান দখল করেছেন। তৃতীয় স্থানেও দুজন কামাল উদ্দীন জোয়ার্দ্দার ও আতিয়ার রহমান ২৫ টি করে ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। পরাজিত প্রার্থীদের মধ্যে মরিয়ম শেলী পেয়েছেন ২৪ ভোট, জেড. আলম পেয়েছেন ২৩ ভোট, রেজাউল করিম লিটন পেয়েছেন ২২ ভোট ও এমএম মামুন এবং নাসির উদ্দীন জোয়ার্দ্দার ২০টি করে ভোট পেয়েছেন।ফল ঘোষণার সাথে সাথে নবীন সাংবাদিকরা নবনির্বাচিতদেরকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাড. সোহরাব হোসেন। সাথে ছিলেন অ্যাড. আবুল বাশার, অ্যাড. হেদায়েত হোসেন আসলামসহ অনেকে। সকাল ৯টা থেকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে টানা ৫ ঘণ্টা ভোটগ্রহণ করা হয়। ৫০ জন সদস্যের সকলেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করায় যেমন নতুন রেকর্ড গড়লো, তেমনি এবারই প্রথম চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দুটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেলভুক্ত হয়ে প্রার্থীরা ভোট যুদ্ধে নামে। যদিও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক মাহতাব উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক সরদার আল আমিন নির্বাচনে মনোনয়ন গ্রহণের পূর্বেই ঐক্যমতের কমিটি গঠনের গুরুত্বারোপ করেন। সকলকে আহ্বান করে নির্বাচন এড়ানোর আহ্বানে তেমন সাড়া না মেলায় ভোটযুদ্ধ শুরু হয়। নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর গতকাল বিকেলেই জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের সাথে নব নির্বাচিত কমিটি সৌজন্য সাক্ষাত করতে যান। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, প্রেসক্লাব একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। সমাজের স্বার্থেই এ প্রতিষ্ঠানকে সার্বজনীন রাখতে হবে। থাকতে হবে। নির্বাচনে পরাজিত শক্তিকেও সংগঠনের স্বার্থে মূল্যায়ন করতে হবে। কাছে টানতে হবে। সম্মিলিতভাবে চলতে পারলেই সর্বস্তর থেকে নব নির্বাচিত কমিটি প্রশংসিত হবে।
হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নে সকলকে অংশ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পত্র-পত্রিকায় সাংবাদিকদের একটু বেশি বেশি করে সমস্যা তুলে ধরতে হবে। সমস্যা তুলে ধরলে আমাদের পক্ষে সমস্যা নিরসনে পদক্ষেপ নেয়া সহজ হয়। তাছাড়া সব সময় সকল ক্ষেত্রেই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনেরও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু নব নির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে সকলকে সাথে নিয়ে প্রেসক্লাবের উন্নয়ন তরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, প্রেসক্লাবের সাথে আমি সব সময়ই আছি থাকবো। এদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সহসভাপতি সুস্তির বিন আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত কমিটিকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দিত করেন।
সন্ধ্যায় নবনির্বাচিত কয়েকজন ও নবীন সাংবাদিকদের আয়োজনে শ্রীমন্ত টাউনহলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে শান্ত, রিপা, মজিবার ও বিট্টু শামীম সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত সভাপতি আজাদ মালিতা ও সাধারণ সম্পাদক ফাইজার চৌধুরীসহ নির্বাচিত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে মেহেরপুর গাংনী প্রেসক্লাব। গতকাল রোববার ফলাফল ঘোষণার পর গাংনী প্রেসক্লাব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক লিখিত অভিনন্দন বার্তা প্রদান করেন।
অভিনন্দন বার্তায় বলা হয় শুধু চুয়াডাঙ্গা নয় প্রতিবেশি জেলা মেহেরপুরসহ সারাদেশের সাংবদিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ বলিষ্ট ভূমিকা রাখবেন বলে বিশ্বাস করে গাংনী প্রেসক্লাব। সংবাদ ও সাংবাদিকতার মৌলিক বিষয়ে তাদের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিক অঙ্গন আরো সমৃদ্ধ হবে। যার সুবাতাস ছড়িয়ে পড়বে এতদাঞ্চলে। নব নির্বাচিত কমিটির সার্বিক মঙ্গল কামনা করেন গাংনী প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ।