উজ্জ্বল মাসুদ/কামরুজ্জামান বেল্টু: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জোর প্রচার প্রচারণায় মূলত ৩ জন ছাড়াও ৬ জনের নামই ইতোমধ্যে উঠে এসেছে আলোচনায়। এরা হলেন, বর্তমান মেয়র বিএনপি মনোনীত মীর মহি উদ্দিন, আওয়ামী লীগ মনোনীত হাসান কাদির গনু, জাসদের এম সবেদ আলী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) রোকসানা পারভীন এবং স্বতন্ত্র দু প্রার্থী সাদেকুর রহমান ও শামীম আল মামুন প্রিন্স। মীর মহি উদ্দিনের প্রতীক ধানের শীষ, হাসান কাদির গনুর প্রতীক নৌকা, এম সবেদ আলীর প্রতীক মশাল, রোকসানা পারভীনের প্রতীক আম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদেকুর রহমানের প্রতীক মোবাইল ও শামীম আল মামুন প্রিন্সের প্রতীক রেলইঞ্জিন।
৬ প্রার্থী মনোনয়ন দাখিলের সময় যে হলফনামা দাখিল করেছেন, তাতে পাওয়া গেছে প্রাথীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। নির্বাচন কমিশনে পেশকৃত হলফনামায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মীর মহি উদ্দিনের নির্বাচনী সম্ভাব্য ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে পোস্টার ৩০ হাজার টাকা, নির্বাচনী ক্যাম্প খরচ ১০ হাজার টাকা, প্রার্থীর যাতায়াত খরচ ২০ হাজার টাকা, ঘরোয়া বৈঠক বা সভা বাবদ ৫ হাজার টাকা, লিফলেট খরচ ৬ হাজার টাকা, হ্যান্ডবিল খরচ ৬ হাজার টাকা, ব্যানার খরচ ১২ হাজার টাকা, ডিজিটাল ব্যানার ৩৫ হাজার টাকা, পথসভা খরচ ৫ হাজার টাকা, মাইকিং খরচ ৩৩ হাজার টাকা, প্রতীক খরচ ৫ হাজার টাকা, অন্যান্য ১০ হাজার টাকা। মোট সম্ভাব্য ব্যয় ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। সম্ভাব্য এ ব্যয়ের জন্য সম্ভাব্য আয়ের খাতে রেখেছেন নিজের ব্যাবসার ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রার্থী মীর মহি উদ্দিনের বার্ষিক আয়ের উৎস ব্যবসা খাতে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাড়ি অ্যাপার্টমেন্ট দোকান ভাড়া ৩৬ হাজার, পৌরসভার সম্মানি ভাতা ২ লাখ ৪০ হাজার, গচ্ছিত অর্থ নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার, ব্যাংকে ১৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এছাড়া তার দায়-দেনা রয়েছে কুষ্টিয়া শহরে হাউজ বিল্ডিং কর্তৃক বাড়ি নির্মাণ বাবদ দেনা ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং পূবালি ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখায় দেনা রয়েছে ৫০ লাখ টাকা। প্রার্থী এমএ পাস।
আওয়ামী লীগ প্রাথী হাসান কাদির গনুর সম্ভাব্য ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে (হলফ নামায় প্রদত্ত তথ্য মতে) পোস্টার ৬০ হাজার টাকা, নির্বাচনী ক্যাম্প ৫ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ক্যাম্প ৬ হাজার টাকা, লিফলেট ১০ হাজার টাকা, হ্যান্ডবিল ১০ হাজার টাকা, ব্যানার ৫ হাজার টাকা, মাইকিং ৫৬ হাজার টাকা, অন্যান্য ১০ হাজার টাকা। মোট ১ লাখ ৬২ হাজার টাকা। প্রার্থীর এ ব্যয়ের জন্য আয়ের খাত দেখানো হয়েছে, নিজ ব্যবসার আয় থেকে প্রাপ্য সম্ভাব্য অর্থ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রার্থীর বার্ষিক আয় ব্যবসা (মাছ চাষ) থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাড়ি অ্যাপার্টমেন্ট দোকান ভাড়া বাবদ ৪০ হাজার টাকা, কৃষি খাতে ২০ হাজার, নগদ অর্থ ১৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ব্যাংকে ৫ হাজার। প্রার্থী এসএসএসি পাস।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) মনোনীত প্রাথী এম সবেদ আলীর হলফনামায় যে তথ্য দিয়েছেন, তার মধ্যে সম্ভাব্য ব্যয় দেখানো হয়েছে পোস্টার খরচ ১৫ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ক্যাম্প ৭ হাজার টাকা, যাতায়াত খরচ ১১ হাজার ৫শ টাকা, ঘরোয়া বৈঠক ৫ হাজার টাকা, লিফলেট ২ হাজার টাকা, হ্যান্ডবিল ৮ হাজার টাকা, ব্যনার ২ হাজার ৫শ টাকা, পথসভা ২ হাজার, মাইকিং ৭ হাজার, অফিস আপ্যায়ন ৩ হাজার টাকা। মোট সম্ভাব্য ব্যয় ৬৩ হাজার টাকা। সম্ভাব্য এ ব্যয়ের জন্য সম্ভাব্য আয়ের খাত হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, নিজের আয় তথা কৃষি খাত ও রাখি মাল থেকে ৬০ হাজার টাকা। প্রার্থীর বার্ষিক আয়ের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন কৃষি খাত ১২ হাজার, বাড়ি অ্যাপার্টমেন্ট দোকান ভাড়া ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা, ব্যাবসা খাতে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এছাড়া স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে মনিরুজ্জামান দেবেন ৩০ হাজার টাকা। তিনি সম্পর্কে জামাই। নগদ অর্থ ৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। ব্যাংকে ৩০ হাজার টাকা। প্রার্থী এইচএসসি পাস।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এনপিপির প্রার্থী রোকসানা পারভীন মনোনয়নপত্রের সাথে দেয়া হলফনামায় যে তথ্য দিয়েছেন, তার মধ্যে সম্ভাব্য ব্যয় দেখানো হয়েছে, পোস্টার ২৫ হাজার টাকা, নির্বাচনী ক্যাম্প ৬০ হাজার, কেন্দ্রীয় ক্যাম্প ৭ হাজার টাকা, যাতায়াত খরচ ২০ হাজার টাকা, হ্যান্ডবিল খরচ ২ হাজার টাকা, ব্যানার খরচ ৬ হাজার টাকা, পথসভা ৩ হাজার, মাইকিং ৯ হাজার। নির্বাচনী প্রতীক খরচ ৫ হাজার টাকা, অফিস আপ্যায়ন ৭ হাজার ৫শ টাকা, কর্মীবাবদ ৬ হাজার ৭শ ৫০ টাকা, অন্যান্য ১ হাজার টাকা। মোট সম্ভাব্য ব্যয় ১ লাখ ৪৭ হাজার ২শ ৫০ টাকা। ব্যয়ের জন্য আয়ের খাতে রয়েছে নিজের বাড়িতে বুটিক ব্যবসার নিজ আয় থেকে ১ লাখ টাকা, বার্ষিক আয়ের উৎসসমূহের মধ্যে রয়েছে বুটিক ব্যবসায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নগদ অর্থ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রার্থীর স্বামী ইকবাল হাসান ধার হিসেবে দেবেন ১ লাখ টাকা। প্রাথী স্বশিক্ষিত।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদেকুর রহমানের নির্বাচনী সম্ভাব্য ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে পোস্টার ৭ হাজার টাকা, নির্বাচনী ক্যাম্প খরচ ৩৬ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ক্যাম্প ১০ হাজার টাকা, প্রার্থীর যাতায়াত খরচ ১০ হাজার টাকা, ঘরোয়া বৈঠক বা সভা বাবদ ৪ হাজার ৫শ টাকা, লিফলেট খরচ ৩ হাজার টাকা, হ্যান্ডবিল খরচ ২ হাজার টাকা, ব্যানার খরচ ৩ হাজার টাকা, ডিজিটাল ব্যানার ৬ হাজার টাকা, পথসভা খরচ ১ হাজার টাকা, মাইকিং খরচ ১ হাজার ৫শ টাকা, পোর্ট্ট্রেট খরচ ১ হাজার টাকা, প্রতীক খরচ ১ হাজার টাকা, অফিস আপ্যায়ন ৪ হাজার ৫শ টাকা, কর্মী বাবদ ১ হাজার টাকা, টেলিভিশন বা ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচার বাবদ ১ হাজার, অন্যান্য ৩ হাজার টাকা। মোট সম্ভাব্য ব্যয় ৯৫ হাজার ৫শ টাকা। সম্ভাব্য এ ব্যয়ের জন্য সম্ভাব্য আয়ের খাতে রেখেছেন নিজের ব্যাবসার ৫০ হাজার টাকা। স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদেকুর রহমানের বার্ষিক আয়ের উৎস ব্যবসা খাতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া চাচা জালাল ধার হিসেবে দেবেন ৩০ হাজার টাকা। স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে আবুল কালাম আজাদ দান করবেন ২০ হাজার টাকা। তিনি সম্পর্কে মামা। প্রার্থীর নগদ আছে ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৫ হাজার টাকা। প্রার্থী এমএসএস পাস।
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আল মামুন প্রিন্স নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় নির্বাচনী সম্ভাব্য ব্যয়ের মধ্যে রেখেছেন পোস্টার ১০ হাজার টাকা, লিফলেট খরচ ১০ হাজার ৫শ টাকা, ব্যানার খরচ ৫ হাজার ৫শ টাকা, মাইকিং খরচ ৩ হাজার ১শ ৫০ টাকা, অন্যান্য ৮শ ৫০ টাকা। মোট সম্ভাব্য ব্যয় ৩০ হাজার টাকা। সম্ভাব্য এ ব্যয়ের জন্য সম্ভাব্য আয়ের খাতে রেখেছেন নিজের ব্যাবসার ৩০ হাজার টাকা। বার্ষিক আয়ের উৎস কৃষি খাতে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গচ্ছিত অর্থ নগদ ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। প্রার্থী এইচএসসি পাস।