মানুষের অকাল মৃত্যু এতোটা গা সওয়া হলে কি চলে?

সারাদেশেই দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিনই লম্বা হচ্ছে মৃত্যু সংখ্যার তালিকা। যাকে মৃত্যু মিছিল বলেও মন্তব্য করছেন অনেকে। কিন্তু এভাবে আর কতোদিন দুর্ঘটনার কাছে আমাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে, ঝরতে হবে অকালে? মানুষের অকাল মৃত্যু এতোটা গা সওয়া হলে কি চলে?

একসময় দুর্ঘটনাকে নিছুক দুর্ঘটনা বলে চালানো হলেও কালের বিবর্তনে বিজ্ঞান তা মানতে নারাজ। অবশ্যই বাড়তি সতর্কতায় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। আর এই বাড়তি সতর্ক করতেই আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি প্রয়োজন সচেতনতার আলো ছড়ানো। আমাদের দেশের সড়ক দুর্ঘটনার হালচিত্র শুধু হতাশাজনকই নয়, দায়িত্বহীনতাও ফুটে ফুটে ওঠে পদে পদে। আইন প্রয়োগে যেমন উদাসীনতা, তেমনই চালক পথচারীদের অনেকেরই অবজ্ঞা উদাসীনতা। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। সড়ক রূপ নিচ্ছে মৃত্যুপুরীতে।

বৈধ যানবাহনের চালকের চালকস্বীকৃতিপত্র না থাকলে আইন প্রয়োগের যতোটা তোড়জোড় দেখা যায়, তার ন্যূনতমও পরিলক্ষিত হয় না অবৈধ যানের অবৈধ চালকের হাতে মানুষ মরলেও। অথচ দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী, অস্বীকৃত চালকের হাতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেও হত্যা মামলার মতোই কঠোর মামলা হওয়ার কথা। বিচারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও বিধান রাখা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, অবৈধ যানে অবৈধ চালকের হাতে এতো মানুষ মরছে অথচ একটির বেলাতেও সেরকম কোনো পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না কেন? দরিদ্র্যের প্রতি দরদ? আইন তো তা বলে না।

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই’ চাই সড়কে নিরাপত্তা’ এসব স্লোগান দীর্ঘদিন ধরে সর্বস্তর থেকেই উচ্চারিত হয়। তা কর্তব্যরত কর্তাদের কতোটা কর্ণপাত হয় তা ভাববার বিষয় বটে। দুর্ঘটনা বৃদ্ধির ধরন দেখে বলতে হয়, তবে কি দাবি দাওয়া আদায়ের স্লোগানের আওয়াজ আরো বাড়াতে হবে?