সৌদিতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ঝিনাইদহের এক গৃহবধূ

 

ঝিনাইদহ/ডাকবাংলা প্রতিনিধি: সৌদি আরবে অত্যাচার ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার ঝিনাইদহের মালা খাতুন বাড়ি ফিরতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। সাহেবনগর গ্রামের মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী ও ২ সন্তানের জননী মালা ৮ মাস আগে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে যান। নির্যাতনের ফলে মালার শরীর এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। হাঁটাচলা করতে পারেন না। কাজ করার শক্তি ফুরিয়ে গেছে তার। দ্রুত দেশে ফিরতে না পারলে মালা খাতুন আত্মহত্যা করবেন বলে স্বামীকে জানিয়ে দিয়েছেন। ফোনে সর্বশেষ দেয়া তথ্য মতে, সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের আল কাসিম রোডের হুরাইভিলা নামক স্থানে আছেন হতভাগ্য মালা খাতুন।

স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর অত্যাচার ও পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে মালার ওপর। কাজের কথা বলে বাসা বদল করে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ানো হচ্ছে তাকে। হাতবদল হতে হতে মালা খাতুন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। দালালদের কথা না শুনলে তার ওপর নির্যাতন চলে। মোবাইলফোনে তার আর্তনাদ শুনে স্বামী মোশাররফ হোসেন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মালাকে ফিরিয়ে আনতে বর্তমানে সৌদি প্রবাসী চুয়াডাঙ্গার রশিদ দালালের ছোট ভাই সজলের কাছে মোটা অঙ্কের টাকাও দিয়েছেন। সজল চুয়াডাঙ্গা কৃষি ব্যাংকে চাকরি করে। এ বিষয়ে আল-আবলুম ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির মালিক আবদুল আজিজ মালার স্বামীকে বারবার ঢাকায় আসতে বলেছেন। ঢাকায় আলোচনা করে স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে আবদুল আজিজ মোশাররফকে জানিয়েছেন। এদিকে ঢাকায় গেলে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করা হতে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন মালার স্বামী। কারণ এর আগে উপজেলার পোতাহাটি গ্রামের এক গৃহবধূকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের মোশারফ হোসেনের স্ত্রী মালা খাতুন গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে গত প্রায় ৮ মাস আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে আল-আবলুম এন্টারন্যাশনাল এজেন্সির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আব্দুল আজিজ তকে পাঠায়। তার বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলায়। সৌদি প্রবাসী চুয়াডাঙ্গার আব্দুর রশিদ নামে এক দালাল মালাকে আব্দুল আজিজের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠিয়ে ছিলো বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছেন।

রিনা খাতুন নামে এক যুবতি জানান, সৌদিতে গিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়ে ছিলো। ৩ মাস থাকার পর রিনা দেশে ফিরে আসেন। সেখানে ২৫ দিন তিনি অভুক্ত ছিলের। রিনার ওপরও পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়।

এছাড়া মালা খাতুনের স্বামী মোশাররফ তার নাবালক দু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মালাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। মায়ের এই দুরাবস্থার কথা শুনে মালার দু সন্তানও সর্বক্ষণ কান্নাকাটি করছে। বিষয়টি নিয়ে সাগান্না ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল মামুন জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। মেয়েটিকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে তিনি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।