চায়ের দোকানে পানি টেনে পরের বাড়ির ভাত চেয়ে খেয়ে জীবন বাঁচে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাকের

মহেশপুর প্রতিনিধি: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বীর লড়াকু সৈনিক হিসেবে যিনি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করে স্বাধীন করেছেন সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক (৬০) বাজারে বাজারে চায়ের দোকানে পানি দিয়ে এবং পরের বাড়ি ভাত চেয়ে খেয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। ১৯৭১ সালের রণাঙ্গণের বীর সৈনিক আব্দুর রাজ্জাক উপজেলার ফতেপুর নিমতলা গ্রামের মৃত আবু সাঈদ মুন্সির ২ সংসারে ১০ ছেলে মেয়ের মধ্যে রাজ্জাক ছিলের তৃতীয়। তিনি একমুঠো ভাতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ান। তার একমাত্র মেয়ে পরের ঘরে চলে গেছে অভাব অনটনের কারণে সেও কোনো খোঁজ খবর রাখে না। তিনি সকাল হলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান পাগলের মতো। সারাদিন বিভিন্ন বাজারে চায়ের দোকানে পানি এনে দিয়ে খান এক কাপ চা। তার নিজস্ব কোনো ঘরবাড়ি বা সংসার নেই। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শেষ করে বাড়ি ফিরে এলে এক বছর পরে আনসার বাহিনীতে চাকরি করতে যান। চাকরিরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। সেই থেকে তিনি এখনও পর্যন্ত মানসিক ভারসাম্যহীন। রাস্তায় রাস্তায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনিয়ে বেড়ান আর যুদ্ধের কাহিনী বর্ণনা করে চা বিস্কুট খান। এইভাবে কেটে যাচ্ছে তার দীর্ঘ জীবন। খুবই দুঃখ দুর্দাশার মধ্যে দিন কাটে। মহেশপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মালেক গাজী আব্দুর রাজ্জাককে বাড়িঘর তৈরি করে দেয়ার আশ্বাস দিলেও প্রয়োজনীয় জমি না পাওয়ায় এখনো তা সম্ভব হয়নি। ১৯৭১ সালে ৮নং সেক্টরে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বয়রা সাব সেক্টরের অধীন তিনি যুদ্ধ করেন। বর্তমান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ড. আব্দুল মালেক গাজী বলেন, আব্দুর রাজ্জাক একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু সেই সাহসী সৈনিক আজ চায়ের দোকানে পানি টেনে এক কাপ চা বা একটি পাউরুটি খেয়ে জীবন বাঁচান।