প্রকৃত আসামীদের শাস্তি না দিলে বৃহত্তর কর্মসূচী দেবে বাউল কল্যাণ সংস্থা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় প্রয়াত ফকির ফজলু শাহ’র পুত্র জাকারিয়া ফকিরকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থা। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে শহিদ হাসান চত্বরের মুক্ত মঞ্চের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ ফকির, সহ-সভাপতি তৌহিদ মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন শাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন, সাংস্কৃতি সম্পাদক রইছ উদ্দিন শাহসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার বাউলেরা অংশ গ্রহণ করেন। মানববন্ধনে জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ ফকির বলেন, আমরা ফকির সম্প্রদায়ের লোকেরা খুব শান্ত প্রকৃতির। আমরা লালন অনুসারী বাউল সম্প্রদায় বাংলার আনাচে কানাচে সাধুসংঘ করে আসছি। কিন্তু সমাজের কিছু দুস্কৃতি প্রকৃতির মানুষ আমাদের উপর বিভিন্ন সময় বর্বর অত্যাচার করে আসছে। গত ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলুকদিয়া ইউনিয়নের আকুন্দবাড়ীয়া গ্রামে ফকির ফজলু শাহ’র ওফাৎ দিবস উপলক্ষ্যে ফকির বাগানে সাধু সংঘ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সাধু সংঘের আয়োজক ফকির ফজলু শাহ’র ছোট ছেলে জাকারিয়া হোসেন জাকির(৩২) বাউলদের জন্য কাঁথা লেপ আনতে বাড়িতে যায়। বাড়ি থেকে সাধু সংঘে ফেরার পথে রাত ১২টার দিকে পথের মধ্যে করিমন থামিয়ে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বাউল ও সাধুদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই নির্মম ও নৃশংস হত্যার দ্রুত সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থার নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় জেলার সকল বাউলদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে হুশিয়ারী দেওয়া হয়। মানববন্ধন শেষে সকল বাউলদের নিয়ে মৌন মিছিল করে জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থা। মিছিলটি শহরের কোট রোড প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস ও পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। পুলিশ সুপারের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার ছুফী উল্লাহ।

উল্লেখ্য, পিতার ওফাৎ দিবসে ওরশ রাতে ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি কোপে খুন হন চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলুকদিয়া আকন্দবাড়িয়া গাংপাড়ার জাকারিয়া হোসেন ওরফে জাকির (৩২)। পুলিশ জাকারিয়া আলম ওরফে জাকিরকে বহন করা করিমনচালক মেহেরপুর জেলা সদরের সিংহাটির রাশেদুল ইসলামকে ঘটনার রাতেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে সব তথ্য ফাঁস করে দিয়েছে। অপরদিকে মেহেরপুরের নতুন দরবেশপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মুক্তার হোসেনকে (৩৫) গত শনিবার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত শনিবার জাকির হোসেন ওরফে জাকিরের বড় ভাই কিবরিয়া হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় কাউকে আসামি করা হয়েছে কি-না তা জানা যায়নি। পুলিশও সে বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেনি। তবে সূত্রে জানাগেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে করিমনচালক রাশেদুল ইসলাম বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার ছুফী উল্লাহ জানান, ঘটনার পর জাকিরের বড় ভাই কিবরিয়া হোসেন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে কি কারণে এই খুন ? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া করিমন চালক রাশিদুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খুনীদের গ্রেফতার করতে সাঁড়াসি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।