গাংনীতে অন্তর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভের আগুন জ্বলছে : গ্রেফতার হয়নি সবুজ
গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামের প্রবাসীর শিশুপুত্র অন্তর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও খুনীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল এখন বাওট গ্রাম। গতকাল শনিবার দুপুরে মানববন্ধন করে সড়ক অবরোধ ও আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী। প্রধান আসামি সবুজের খালার বসত বাড়িতে কবর সদৃশ্য বিষয়টি বিক্ষুদ্ধ করে তোলে গ্রামবাসীকে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার প্রধান অভিযুক্ত স্থানীয় সন্ত্রাসী সবুজ হোসেনের খালা বাওট গ্রামের রেক্সেনা খাতুন ও খালু মিজানুর রহমানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে গ্রামবাসী। গতকাল সকালে খালা-খালুর বসতবাড়ির সিঁড়ি রুমের নিচে একটি কবর সাদৃশ্য দেখতে পান গ্রামবাসী। অন্তরকে হত্যা করে গুম করার জন্য কবর খোড়া হয়ে থাকতে পারে এমন ধারণা স্থানীয়দের। এ খবর ছড়িয়ে পড়েলে উত্তেজিত জনতা ওই বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয়। তবে ঘটনার সময় কেউ বাড়িতে ছিলেন না।
খবর পেয়ে গাংনী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) শংকর পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে থামাতে সক্ষম হন। কবরের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে গতকাল শনিবার দুপুরে বাওট বাজারে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া প্রধান সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে অন্তরের সহপাঠীসহ প্রার্শ্ববর্তী কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। এ সময় টায়ার জালিয়ে সড়ক অবরোধ করে সবুজসহ তার পিতা-মাতে দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে অন্তরের মরদেহ গ্রাম্য কবরস্থানে দাফনের পর রাতেই তার মা সজিনা খাতুন বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সন্ত্রাসী সবুজকে প্রধান আসামি করে তার পিতা-মাত ও খালা-খালুকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলার আসামি হিসেবে তার খালা-খালুকে গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল দুপুরে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। তবে বাড়িতে কবর খোড়ার বিষয়ে আসামিরা কোনো কিছুই স্বীকারোক্তি দেয়নি বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার পরিদর্শক মুক্তার হোসেন।
বাওট গ্রামের সৌদী প্রবাসী কাফিরুল ইসলামের ছেলে ও স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র অন্তরকে বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় অপহরণের পর নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে প্রতিবেশী চিহ্নিত সন্ত্রাসী সবুজ হোসেন। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ওই রাতেই সবুজের বাড়িঘর ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় গ্রামবাসী। পরদিন শুক্রবার সকালে গ্রামের প্রধান সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচিতে আসামি গ্রেফতারে ৩৬ ঘণ্টা সময় বেধে দেন গ্রামবাসী। তবে এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি প্রধান অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সবুজ। গ্রামবাসীর ঘোষণা অনুযায়ী ৩৬ ঘণ্টা পার হলে কি হয় সেটিই এখন দেখার বিষয়।