ভিজে স্কুলের আইসিটির মাস্টার ট্রেইনারের বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ : কর্তৃপক্ষের চাপে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ভি.জে স্কুলে চলমান টিকিউআই-২ প্রকল্পভুক্ত আইসিটি প্রশিক্ষণের মাস্টার ট্রেইনার বেলাল হোসেনের টাকা আত্মসাৎ নিয়ে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। গতকাল সোমবার প্রশিক্ষণ সমাপ্তকারীদের ২ হাজার ৭শ টাকার পরিবর্তে নির্ধারিত ৩ হাজার করেই সম্মানি দেয়া হয়েছে। ইতঃপূর্বে ৩শ করে টাকা কম দেয়া হয়েছে যে সকল প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের, তাদেরকে আবার মোবাইলফোনে ডেকে নিয়ে বাকি ৩শ করে টাকা দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ অক্টোবর থেকে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকিউআই-২ প্রকল্পের অধীনে মাধ্যমিক শিক্ষকদের পেশাগত ধারাবাহিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ৫ দিনব্যাপী আইসিটি ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক ফলোআপ প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণ কোর্স আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩টি ব্যাচে শেষ হবে। নিয়মানুযায়ী ৫ দিনব্যাপী ওই ফলোআপ প্রশিক্ষণে প্রত্যেক ব্যাচে ৩০ শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। কিন্তু প্রত্যেক ব্যাচে ২/৩ জন করে শিক্ষক কম নিয়ে কিছু ভুয়া শিক্ষকের নামে মিথ্যা মাস্টাররোল দেখিয়ে মাস্টার ট্রেইনার গোকুলখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক বেলাল হোসেন তাদের টাকা উত্তোলন করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষণে ৬ জন মাস্টার ট্রেইনার ২ জন করে তিনটি গ্রুপে প্রশিক্ষণ করাচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে ৬ জন মাস্টার ট্রেইনারদের মধ্যে ২৯তম ব্যাচে নূর কুতুবুল আলম ও মানোয়ার হোসেন নামের ২ জন মাস্টার ট্রেইনারের স্বাক্ষর জাল করে তাদের প্রশিক্ষণ বাবদ পাওনা যাবতীয় টাকা বেলাল হোসেন উত্তোলন করেছেন। ৩০তম ব্যাচে আর একজন মাস্টার ট্রেইনারের নামসহ আরও ২ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শিক্ষকের সমুদয় টাকা তাদের জাল স্বাক্ষর করে উত্তোলন করেছেন বলেও দাবি করা হয়। ৫ দিনব্যাপী ফলোআপ প্রশিক্ষণে প্রতি ব্যাচে ২জন করে মাস্টার ট্রেইনার ও যশোর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে একজন মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণ করানোর কথা। তাদের জন্য ৫ দিনে মোট ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ। কিন্তু যে সপ্তায় যশোর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে কোনো মাস্টার ট্রেইনার আসেন না, সেই সপ্তাহের বরাদ্দের ১০ হাজার টাকা যে দুইজন মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণ করাচ্ছেন তাদের পাওয়ার কথা থাকলেও বেলাল হোসেন যশোর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রশিক্ষকের টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন।
প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ- পার্শ্ববর্তী জেলা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ প্রশিক্ষণ ভেন্যু থেকে যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, টিএ/ডিএ বাবদ ২ হাজার ৭৫০ টাকা এবং আবাসিকের জন্য আরও ২৫০ টাকা, সর্বমোট ৩ হাজার টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা ভেন্যুতে সব মিলিয়ে দিচ্ছে ২ হাজার ৭শ টাকা করে দেয়া হচ্ছে। প্রতি প্রশিক্ষানার্থীদের বরাদ্দকৃত আবাসিক ভাতা ২৫০ টাকা করে মোট ৬৭ হাজার ৫শ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। বেলাল হোসেন ওয়াইফাই জোন বাবদ প্রতি ট্রেনিদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে মোট ১৩ হাজার ৫শ টাকা এবং স্থানীয় মাষ্টার ট্রেইনারদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা থেকেও প্রায় ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও প্রশিক্ষক বেলাল হোসেনের নামে প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে গত ৫ ডিসেম্বর দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। গতকাল ৩২তম ব্যাচের আইসিটি প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। পূর্বের ব্যাচগুলোর সকল প্রশিক্ষণার্থীকে ২ হাজার ৭শ করে টাকা দেয়া হলেও ৩২তম ব্যাচের সকলকেই ৩ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে।