মাথাভাঙ্গা মনিটর: মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হুমকি রুখতে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে বলে দেশটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মহাপরিচালক ডি কে পাঠক গতকাল শুক্রবার বলেন, আইএস একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সজাগ, সতর্ক, সরঞ্জামও আনা হয়েছে এবং সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যাপকভাবে নজরদারি করছি। ভারত সরকারের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে আগের বছরের তুলনায় এবার অনুপ্রবেশের ঘটনা বেড়েছে। প্রধান সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবছর বিভিন্ন সীমান্তে প্রায় ৬২টি অনুপ্রবেশের চেষ্টা ঠেকিয়েছে, যেখানে আগের বছর এই সংখ্যা ছিলো ৪৮।
বিএসএফ প্রধান পাঠক বলেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের বেপরোয়া তৎপরতা ছিলো, যেগুলো আমরা সফলভাবে ঠেকাতে পেরেছি। আইএসের সাথে বাংলাদেশভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর যোগাযোগ গড়ে উঠছে কি-না ভারতীয় গোয়েন্দারা তাও খতিয়ে দেখছেন বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। পাকিস্তানের সাথে ২ হাজার ২৮৯ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশের সাথে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে ভারতের। গত অক্টোবর পর্যন্ত এ বছরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্ত এলাকা থেকে ৭৮টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ২ হাজার ৮৬০টি গোলাবারুদ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে বিএসএফ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বর্ধমান বিস্ফোরণসহ কয়েকটি ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম রাজ্যে বাংলাদেশভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) উপস্থিতি ধরা পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিএসএফ কঠোর নীতি অনুসরণ করছে বলে বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত চৌকিগুলোর নকশা তৈরির পাশাপাশি জালমুদ্রার চোরাচালান, অনুপ্রবেশ, মানবপাচার এবং মাদক ও গরু চোরাচালান রোধে সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিবির সাথে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করেছে বিএসএফ। বিএসএফ প্রধান পাঠক বলেন, আগে অনুপ্রবেশকারীদের আক্রমণের বিপরীতে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়ার নীতিতে থাকায় বাহিনীর অনেক সদস্যের প্রাণহানি হয়েছে। নিজেদের মানুষের মৃত্যুর বিনিময়ে নমনীয় থাকার নীতি চলতে পারে না। সীমান্তে যেন প্রাণহানি না হয় সেজন্য যতোটুকু সম্ভব আমরা চেষ্টা করবো, কিন্তু সেটা সীমার বাইরে গিয়ে নয়। তবে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে জঙ্গিদের উপস্থিতি নজরে এলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় এখন পর্যন্ত আইএসের কোনো হুমকি নেই বলে মনে করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। সম্প্রতি আগরতলায় বিএসএফের ত্রিপুরা অঞ্চলের মহাপরিদর্শক এমএফ ফারুকী বলেন, আমরা বিপদমুক্ত ও নিরাপদ। এই অঞ্চলে (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) আইএসের উপস্থিতি নেই।