মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে কবে

মাদকের কালোথাবা শুধু অপু চৌধুরীকেই নয়, অসংখ্য উদীয়মান প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। বহু পেশাজীবী কর্ম হারিয়ে পথের ভিখেরি। আর কতো যে সংসার মাদকের কারণে তছনছ হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। এরপরও মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সামাজিক আন্দোলনকে তরান্বিত করতে পারেনি, পারেনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের দায়িত্বশীল সকল কর্মকর্তাকে মাদকবিরোধী অভিযানে কর্তব্যপরায়ণ করতে। ঐশী তার পুলিশ অফিসার পিতাসহ মাকে খুন করে দায়িত্বশীল করার তাগিদ দিলেও ঘুম ভাঙেনি সকল কর্তার।
মাদক শুধু ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় নয়, সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যে মাদক, তার মধ্যে নেশার জন্য শরীরে নেয়া ঘুমের ইনজেকশন-প্যাথেডিনসহ হেরোইন, ইয়াবা ও ফেনসিডিল। এসব ড্রাগের কবলে পড়লে ফেরার পথ ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসে। ফিরতে না পেরে কতো যে করুণ আকুতি পথে-ঘাটে আছড়ে মরছে তার খবর কে রাখে? কালের বিবর্তনে সময়ের স্রোতে চেনাজানা মানুষগুলোও যেন কেমন অচেনা হয়ে উঠছে। বদলে যাওয়ার আড়ালে স্বার্থান্ধতা যেমন লুকিয়ে, তেমনই পাশের বাড়ির ছেলে বা মেয়ে মাদকের কবলে পড়ে অধঃপতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে দেখেও উদাসীন। পড়শির সংসার পুড়ছে মাদকের আগুনে, সেই আগুন দেখে নিজেকে তৃপ্ত ভাবা যেমন বোকার স্বর্গে বাস করা, তেমনই বিশেষ সুবিধা নিয়ে বা না নিয়ে দায়িত্বশীলদের চোখ ঘুরিয়ে রাখা মানে নিজের সন্তানকে ঐশীর মতো করে তোলা নয় কি?
মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে গণসচেতনতাই এখন আর যথেষ্ট নয়। কারণ বিগত দিনে যখনই মহল্লাভিত্তিক মাদকবিরোধী গণজাগরণ গড়ে তোলার জন্য সমাজের সচেতন মানুষগুলো এক কাতারে দাঁড়িয়েছেন, তখন মাদকচক্রের সাথে আইন প্রয়োগকারীদেরই কেউ কেউ গোপনে হাত মিলিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির ঝুঁকি বাড়িয়েছে। বোমা রেখে পুলিশে খবর দিয়ে হয়রানি করাই শুধু নয়, নারী নির্যাতন মামলা ঠুকে মাতবরদের হয়রানি করার উদাহরণ এই চুয়াডাঙ্গাতেই বিদ্যমান। সে কারণে, শুধু গণসচেতনতাই যথেষ্ট নয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের বিশেষ উদ্যোগ অপরিহার্য।