পৌর আওয়ামী লীগের ৯টি ওয়ার্ড কমিটির সদস্যদের ভোট গাংনী পৌরসভার মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী আশরাফুল

Gangni pic_29.11.15_ (5) Gangni pic_29.11.15_ (4)

গাংনী প্রতিনিধি: সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মেহেরপুর গাংনী পৌর মেয়র পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হলেন জেলা যুবলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডার। গতকাল রোববার পৌর আওয়ামী লীগের ৯টি ওয়ার্ড কমিটির সদস্যদের গোপন ভোটে তিনি বিজয়ী হন। পৌর আওয়ামী লীগের ৯টি ওয়ার্ড কমিটির ৪৬২ জন সদস্যের মধ্যে ভোট প্রদান করেন ৩৮৯ জন। এর মধ্যে বিজয়ী আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডার পেয়েছেন ২৮৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগ নেতা হাজি মহাসিন আলী পেয়েছেন ৮০ ভোট।

গতকাল বিকেল তিনটার দিকে গাংনী সিদ্দিকীয়া সিনিয়র আলিম মাদরাসা কক্ষে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সিরাজুল ইসলাম। ভোটগ্রহণ তদারকি করেন মনোনয়ন সিলেকশন বোর্ড সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন দোদুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা আখতার বানু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মহিবুর রহমান মিন্টু, কৃষকলীগ নেতা ফজলুল হক।

এদিকে গত কয়েকদিন থেকে এলাকার মানুষের মধ্যে প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থীর বিষয়টি। এটি নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়। গতকাল বিকেলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্যবৃন্দ ছাড়াও নেতাকর্মী সমর্থকদের ভিড় জমে ভোটকেন্দ্রে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার।

মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা পরাজিত হয়েছেন তাদের উদ্দেশে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন দোদুল বলেন, আবেদন জমা দেয়া ৬ প্রার্থীই যোগ্য। তারা দলের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে মনোনয়ন চেয়েছেন। তাই এখন সকলে মিলে যদি দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করা যায় তাহলে শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের হাত শক্তিশালী হবে। সব ভেদাভেদ ভুলে শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নির্দেশনা দেন তিনি।

বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেন, সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সাথে একক প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। যা সারাদেশের মধ্যে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আশাবাদী তিনি। দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সব ধরনের সহযোগিতা করতে হবে। কারো কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীক বিজয়ী করার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন এমএ খালেক। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকার পর কয়েকজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ার অংশগ্রহণ করেছেন যা অব্যশই ইতিবাচক। এমনভাবে সকলেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্দেশে সারাদেশের মতো গাংনী পৌরসভায় একক প্রার্থী নির্ধারণে গত তিন দিন ধরে প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় সিলেকশন বোর্ডের আহ্বান অনুযায়ী রোববার ছয় প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে নির্ধারিত ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে ফরম জমা দেন। এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ নেতা হাজি মহাসিন আলী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন, জেলা যুবলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডার, আওয়ামী লীগ নেতা পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ এবং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিরুল ইসলাম।

গতকাল দুপুরে প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন সিলেকশন বোর্ডের সদস্য জেলা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকবৃন্দ। এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে একক প্রার্থী নির্ধারণ হলেও নৌকা প্রতীকের জন্য দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় সারাদেশের দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের লক্ষ্যে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভার পরে দলীয় প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হতে পারে বলে দলীয়সূত্রে জানা গেছে।