খেলার মাঠে প্রতিযোগিতার বদলে প্রতিহিংসা কাম্য নয়

খেলার মাঠে জয়-পরাজয় থাকবেই। জয়-পরাজয়ের লড়াই উত্তেজনার আঁচ তথা উষ্ণতা নেবে দর্শক সমর্থকেরা। তার বদলে যদি হানাহানি শুরু হয়, সংঘর্ষ ঠেকাতে যদি পুলিশকে ছুড়তে হয় গুলি, তা হলে পরবর্তীতে কোনো সংগঠন বা সংগঠকই কি কোনো খেলার আয়োজন করতে সাহস পাবে? পায় না বলেই পূর্বের মতো খেলাধুলা নেই। যেটুকু আছে তাও উবে যাওয়ার উপক্রম।
মেহেরপুর জেলা সদরের শালিকা ও গোভিপুর গ্রামবাসীর মধ্যে ফুটবল খেলা নিয়ে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। গতপরশু এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ রুখতে পুলিশকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার বিকেলে ফুটবল খেলার সময় বিরোধ দানা বাধে। ৮জন আহত হয়। তার জের ধরে এক করিমনচালককে কুপিয়ে জখম করা হয়। এরপর গত মঙ্গলবার সকালেই পাশাপাশি দুটি গ্রামবাসীর মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। মাঠের ফসল ক্ষতি করারও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের অনেকেরই অভিমত, পুলিশ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় বলেই প্রাণহানি থেকে রক্ষা পেয়েছে দুটি গ্রাম।
খেলাধুলার আয়োজন না থাকলে কৃতী খেলোয়াড় তৈরি হয় না। যুব সমাজকে সুপথে রাখতেও দরকার খেলাধুলার আয়োজন। আয়োজন মানেই যদি যেনতেনভাবেই হোক জয় নিশ্চিত করার চক্রান্ত হয় তা হলে চর্চার গুরুত্ব থাকে না। খেলার গুরুত্বও ম্লান হয়ে যায়। তাছাড়া খেলার মাঠে দর্শক না থাকলে খেলাটাও কি জমে? দর্শকরাই তো দেবে খেলোয়াড়ের নৈপুণ্যের স্বীকৃতি। সমর্থকদের করতালি খেলার গতি বাড়িয়ে দেয়। খেলার মাঠে দর্শকশূন্যতা মানে আমেজহীনতা। দর্শক সাধারণ খেলার মাঠে খেলার উত্তেজনার আঁচ নিয়ে যেমন উষ্ণ হয়, তেমনই খেলোয়াড়দের উৎসাহ জোগায় মূলত দর্শকরাই।
খেলার মাঠে খেলার উত্তেজনা পূর্ণতা দিতে আয়োজকদের যেমন নিরপেক্ষতা অনিবার্য তেমনই অংশগ্রহণকারীদেরও হিংসা পরিহার অপরিহার্য। প্রতিযোগীকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিয়ে নিজেকে বা নিজেদেরকে গড়তে হবে। যে কোনো সুস্থ প্রতিযোগিতা নিজেকে বা নিজেদের প্রস্তত করে। আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি প্রতিহিংসার লড়াইয়ে রূপ নেয়, তাকে কি সভ্যদের আয়োজন বলা যায়?

Leave a comment