গাংনী প্রতিনিধি: গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুবরণ করা শিশু সাগরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ পৌঁছুলে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। তবে শিশু পুত্রের মুখ শেষবারের মতো দেখতে পারেননি তার জন্মদাতা পিতা-মাতা। গত রোববার সন্ধ্যায় মেহেরপুর গাংনী উপজেলার আমতৈল গ্রামের পালিত পিতা-মাতার বাড়ির রান্নাঘরে খেলার ছলে গলায় রশির ফাঁস আটকে মৃত্যু বরণ করে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সাগর (৮)।
জানা গেছে, গ্রামবাসী ও পরিবারের কাছে তার মৃত্যুর বিষয়টি স্পষ্ট হলেও তার জন্মদাতা পিতা-মাতার সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় লাশ ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেয় পুলিশ। গতকাল সোমবার লাশ মেহেরপুর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্তের উদ্দেশে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পালিত পিতা নুহু মিয়ার কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে তার দাফন সুম্পন্ন হয়। নিহতের পিতা-মাতা অনুপস্থিত তাই মরদেহ ময়নাতন্ত করানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন। এ বিষয়ে গাংনী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাগরের জন্মদাতা পিতা গাংনী উপজেলার কোদাইলকাটি গ্রামের হ্যাবল মিয়া দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে বরিশালে বসবাস করেন। তার মা গাংনীর একটি ক্লিনিকে কর্মরত থাকার পর সম্প্রতি ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন। সাগরের মৃত্যুর পর নুহু মিয়ার পরিবার তার পিতা-মাতার সাথে যোগাযোগ করেন। গতকাল সকালে হ্যবল মিয়ার সাথে যোগাযোগ সম্ভব হলেও তার মায়ের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন তারা। হ্যাবল মিয়া তাদেরকে জানিয়ে দেয় লাশ দাফন করলে তার কোন আপত্তি নেই। আমতৈল গ্রামের নিঃসন্তান নুহু মিয়া ও রেহেনা খাতুন দম্পত্তি বছর ছয়েক আগে সাগরকে দত্তক গ্রহণ করেন। গত রোববার সন্ধ্যায় বাড়ির রান্নাঘরে ছাগল বাঁধার রশিতে গলায় পেচিয়ে তার মৃত্যু হয় বলে জানায় পরিবার। খেলার ছলে সে ফাঁস আটকে মৃত্যু বরণ করেছে বলে ধারণা তাদের। তবে ঘটনার সময় কেউ অবগত না হলেও সন্ধ্যার পর সাগরকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নুহু ও রেহেনা খাতুন বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। শোক ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশী থেকে গ্রামের মানুষ ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে। নিজের ছেলের মতোই সাগর ও নিঃসন্তান দম্পতি মিশে গিয়েছিলেন। ঘর আলো করে সাগর তাদের বুকে ঠাঁই নিলেও সে সুখ বেশিদিন সইল না বলে মন্তব্য এলাকার অনেকের।