শোর্কাত পরিবেশেও সম্পদ সম্পত্তি নিয়ে কটুক্তি? শ্যালকের দাফনকালে ভগ্নিপতিকে নির্মম পিটুনি

স্টাফ রিপোর্টার: শ্যালকের দাফনে শরিক হতে গিয়ে তার শ্যালকের স্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করায় পিটুনির শিকার হয়েছেন মুক্তা। তিনি অবশ্য মুক্তো হাজি নামেই চুয়াডাঙ্গা শহরে পরিচিত। গতকাল বাদ জোহর চুয়াডাঙ্গা পুরাতন গোরস্তান জামে মসজিদে শ্যালক রুহুল আমিন জেডের নামাজে জানাজার পরপরই পিটুনির শিকার হন তিনি। এছাড়াও সম্পদ সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারার অভিযোগ তুলে স্থানীয় জনতা মুক্তো হাজির এক ভায়রাভাইয়ের ছেলেও মারপিটের শিকার হয়েছেন।
গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আছির উদ্দীন আশু মিয়ার বাড়িতে তার কয়েক মেয়ে ও জামাইকে খানেকটা বন্দি করে স্থানীয়রা দাবি তুলেছে, সদ্য গত হওয়া রুহুল আমিন জেডের স্ত্রী রেশমা খাতুনকে ন্যায্য হিস্যা বুঝে দিতে হবে। অন্যথায় মুক্তি মিলবে না। স্থানীয়রা এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, অবাক হলেও সত্য যে, গতপরশু রাতে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রুহুল আমিন জেডের মৃত্যুর পর গতকাল সকাল থেকে তার বোন-ভগ্নিপতিরা জেডের স্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার পাশাপাশি সম্পদ-সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চক্রান্ত করতে থাকে। জাফরপুরের এক নারীকে হাজির করে জেডের প্রথম স্ত্রী বলেও দাবি করা হয়। অবশ্য পরে ওই নারী মুচলেকা দিয়ে নিজেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছেন।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাঝেরপাড়ার আছির উদ্দীন আশু মিয়া বহুল পরিচিত। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও শিল্প ও বণিক সমিতিরও নেতৃত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন। প্রায় ৫ বছর ধরে তিনি শয্যাশায়ী। ৯ সন্তান। দু ছেলে ৭ মেয়ে। দু ছেলের মধ্যে রুহুল আমিন জেড ছোট। পৈত্রিক দোকানেই বসে ব্যবসা করে আসছিলেন তিনি। গত পরশু রাতে পিতাকে ওষুধ সেবনের পর অসুস্থ স্ত্রী রেশমাকে চিকিৎসকের নিকট নেয়ার পথে তিনি নিজেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন। মারা যান। খবর পেয়ে বোন বোনাইসহ নিকট আত্মীয়-স্বজন শোকার্ত বাড়িতে পৌছুলেও সম্পদ সম্পত্তির হিস্যা নিয়ে নিজেদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। গতকাল সকাল হওয়ার পর বোন-বোনাইয়ের আচরণে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। বাদ জোহর জানাজার পর মুক্তো হাজিকে মারধর শুরু হয়। তিনি বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী। পূর্বে ছিলো মুক্তো ইঞ্জিনিয়ারিং নামের লেদ। তার মারধরের পর দাফন শেষে তারই এক ভায়রাভাইয়ের ছেলে মরহুম জেডকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতেই শুরু হয় মারধর। এছাড়াও শোকার্ত বাড়িতে শোকের বদলে ছিলো অন্যরকম চিত্র। রাতে অবশ্য স্থানীয়রা জানিয়ে দেন, রুহুল আমিন জেড নিঃসন্তান হলেও তার স্ত্রী রয়েছে। স্ত্রীকে ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় প্রতিবেশীরা কাউকে ছাড়বে না।
অপরদিকে বড়বাজারের ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে গতকাল জোহরের পর দোকান বন্ধ করে মরহুমের জানাজা ও দাফনে শরিক হওয়ার জন্য বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা শাখা মাইকিঙ করে আহ্বান জানায়। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যবসায়ীদের অনেকেই দাফনে শরিক হন।